পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট ব্লকের অন্তর্গত এই গ্রামের নাম ছিল খেড়ুয়া। মঙ্গলকোটের পুরানো খেড়ুয়া বা খেড়ুয়া গ্রাম একসময় জমজমাট ছিল। গ্রামটি ছিল ছবির মতো সাজানো। গ্রামে ছিল খেলার মাঠ, চাষের জমি, পুকুর, মন্দির, বসত বাড়ি সবকিছুই। একসময় বিভিন্ন পুজোতেও মেতে উঠতেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু সেই সব কিছুই আজ স্মৃতির পাতায়। এই প্রসঙ্গে খেড়ুয়া বা বর্তমানে নতুন খেড়ুয়া গ্রামের বাসিন্দা দেবকুমার ধারা জানিয়েছেন, “নদী ভাঙনের কারণে সকলকে গ্রাম ছাড়তে হয়েছে। আশ্রয় হারিয়ে খুঁজে নিতে হয়েছে নতুন জায়গা। প্রচুর মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গ্রামের অনেক প্রাচীন ঐতিহ্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে।”
advertisement
আরও পড়ুন : তিস্তাপারের শহর থেকে কুমেরুতে! অ্যান্টার্কটিকায় ৪০০ দিন কাটালেন তরুণ বাঙালি ভূবিজ্ঞানী
সবুজ ঘাসের মাঝখান দিয়ে চলে গিয়েছে গ্রামের পথ। গ্রামে এখনও রয়েছে কৃষকদের জমি, বয়ে যাওয়া বাতাসের মধ্যে রয়েছে সবুজের গন্ধ। গ্রামের পাশ দিয়ে হালকা শব্দে আপন খেয়ালে বয়ে চলেছে অজয় নদ। এই গ্রামে আজও আছে পাকা বাড়ি, রাধামাধবের মন্দির। কিন্তু এই গ্রাম এখনও পড়ে রয়েছে জনমানবহীন হয়ে। বাড়ি ঘর থাকলেও আজ আর দেখা পাওয়া যায়না মানুষের । অজয় নদের ভাঙনের কারণে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন সকল গ্রামবাসী। বহু মানুষের প্রচুর ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। বাধ্য হয়ে বাড়ি ঘর হারিয়ে বেশ কিছুটা দূরে নতুন করে সংসার পাততে হয়েছে সকলকেই। পরবর্তীতে সেখানেই তৈরি হয় নতুন খেড়ুয়া গ্রাম বা খেড়ুয়া গ্রাম। তবে পুরানো খেড়ুয়া গ্রামের সঙ্গে আগেকার বাসিন্দাদের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। সন্তু ঘোষ নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “আমার জন্ম নতুন খেড়ুয়া গ্রামেই। তবে বাবা কাকাদের কাছে শুনেছি এই গ্রামে সবকিছুই ছিল। এখনও এই গ্রামের জন্য মন খারাপ করে। পরিবারের স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে এখানে।” গ্রামের মন্দির,বাড়ি এখন সবই জঙ্গলে ঢাকা। দূর থেকে দেখলে বোঝাই যাবে না যে এই জায়গায় আগে আস্ত একটা গ্রাম ছিল। শুধুমাত্র ভাঙনের কারণে হারিয়ে গিয়েছে একটা সম্পূর্ণ সাজানো গ্রাম।