অনেক সময় নানা কারণে তারা স্কুলে আসে না। তখনই বাইকে চেপে মিসকিন বাবু হাজির হন কারো মাঠে, কারো বাড়িতে। কখনও নিজেই তাদের স্কুল ইউনিফর্ম পরিয়ে নিয়ে আসেন, তো কখনও এলোমেলো চুল আঁচড়ে দেন ভালবাসার ছোঁয়ায়। জামার বোতাম খোলা? সেটাও ঠিক করে দেন নিজের হাতে! শুধু তাই নয়, স্কুল ছুটির পর পড়ুয়াদের নিজের বাইকে চড়িয়ে পৌঁছে দেন বাড়ি। প্রতিদিন এক একজন পড়ুয়া পায় এই ‘স্পেশাল বাইক রাইড’ এর সুযোগ।
advertisement
আরও পড়ুন: বন্ধ ড্রেন…! বসে বসে মার খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা, পেট চলবে কেমনে, বাড়ছে চিন্তা
মিসকিন বাবুর জন্য পড়ুয়াদের মধ্যে যেন লটারি পড়ার মত আনন্দ কাজ করে। মিসকিন বাবু বলেন, “পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে এবং স্কুলমুখী করতে আমার যতটা করা সম্ভব আমি করার চেষ্টা করি। ওদের মুখে হাসি ফুটাতে পারলেই আমি খুশি। স্কুলে না এলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমি ওদের নিয়ে আসি। আর যেহুতু আমি এলাকার ছেলে তাই ওরাও আমাকে খুব ভালবাসে।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বিদ্যালয়ে মাঝেমধ্যে নিজেই রান্না করেন মিসকিন বাবু, আর পড়ুয়াদের খাওয়ান ভালবাসা মেশানো খাবার। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পড়ুয়াদের সুযোগ করে দেন মঞ্চে উঠে নিজেদের প্রতিভা দেখানোর। এমনকি প্রয়োজন পড়লে নিজের পয়সায় কিনে দেন খাতা-কলম, জামা-জুতোও। এভাবেই শিক্ষকতা পেরিয়ে মিসকিন মণ্ডল গড়ে তুলেছেন এক মানবিক সম্পর্ক। শুধু পড়ান নয়, আদর, যত্ন, আর দায়িত্ব নিয়ে তিনি যেন পড়ুয়াদের বড় দাদা। পূর্ব বর্ধমানের এই শিক্ষক সত্যিই এক উজ্জ্বল ব্যতিক্রম, যিনি প্রমাণ করেন আদর্শ শিক্ষক মানেই শুধু পাঠ্য বইয়ের শিক্ষক নয়, একজন ভাল মানুষও।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী