বর্ষাকালে অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দা শান্ত হাজরা বলেন, “ভাঙনে রাস্তাও ভেঙে গিয়েছে। অন্যজনের বাড়ি দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। আজ অবধি কোন কাজ হয়নি। আমরা আতঙ্কে এবং চরম সমস্যায় রয়েছি। এই শুনিয়া গ্রামটি পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম বিধানসভার অন্তর্গত হলেও প্রশাসনিকভাবে কাটোয়া-১ নম্বর ব্লকের কোশিগ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্ভুক্ত। গ্রামে মাত্র ৮০টি পরিবার বাস করেন। নেই কোন স্কুল, কোন স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এমনকি ভোট দিতেও যেতে হয় পাশের গ্রামে, প্রায় চার কিমি পথ পেরিয়ে। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে যে ১.৫ কিমি ঢালাই রাস্তা তৈরি হয়েছিল, তা আজ অজয়ের গ্রাসে।”
advertisement
আরও পড়ুন: রাস্তা নয় যেন মৃত্যু ফাঁদ! চরম সমস্যায় পূর্ব বর্ধমানের এই গ্রামের বাসিন্দারা
একইসঙ্গে ৬ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা খরচ করে বানান হয়েছিল একটি স্নানঘাটও। সেগুলির এখন কেবল ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে। বড় যানবাহন তো ঢুকতেই পারে না, গ্রামে বাইকও ঢোকান দায়। এক টোটোচালক কিরণ হাজরা বলেন, টোটো নিয়ে গ্রামে ঢুকি না রাস্তার জন্য। কোন রোগী থাকলে তাকে কোলে করে নিয়ে আসতে হয়। আর সুস্থ মানুষ হলে কাদা দিয়েই হেঁটে আসতে হয়। জ্ঞান হয়ে থেকে এই অবস্থা দেখছি।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
পঞ্চায়েত বা জনপ্রতিনিধিদের কাছে একাধিকবার দরবার করেও কোন সুরাহা হয়নি। স্থানীয়দের দাবি, ভোটের আগে যত প্রতিশ্রুতি, ভোটের পর সবাই নির্বাক। “স্বাধীনতার এত বছর পরেও আমাদের গ্রামে উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি,” ক্ষোভ উগরে দেন এক প্রবীণ। চারপাশে যেন অজয় নদ অজগরের মত পেঁচিয়ে ধরেছে গ্রামটিকে। বাসিন্দাদের আশঙ্কা, এবার হয়ত গ্রামটাই একদিন গ্রাস করে নেবে নদী। তখন আর ‘শুনিয়া’ নামে কোন গ্রামই থাকবে না, থাকবে কেবল স্মৃতি।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী