যেগুলি একসময় রাজসভায় ছিল। নিয়ম মেনেই বসে সভা, হয় সিদ্ধান্ত। পুজো কমিটির সম্পাদক কল্যাণ চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের বর্ধমানের মহারাজার কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত যে সকল মানুষরা রয়েছেন, সেই তৎকালীন সময় থেকে তাঁরা সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে আমাদের যে পুজো কমিটি রয়েছে, সেইভাবেই তাঁদের নিয়ে রাজতন্ত্রের ধাঁচেই কাজগুলি পরিচালনা করি। রাজতন্ত্রের নিয়মানুসারেই চলে।” ক্ষীরগ্রাম সতীপীঠের পেছনেও রয়েছে নানা গল্প। কথিত আছে, দেবী সতীর ডান পায়ের আঙুল এই স্থানে পড়েছিল।
advertisement
দেবীর প্রস্তরমূর্তি সারা বছর রাখা থাকে জলে, গ্রামেরই ক্ষীরদিঘিতে। প্রতিবছর বৈশাখ সংক্রান্তির দিন দেবীকে জলের ভিতর থেকে তুলে মূল মন্দিরে পুজো করা হয়। ওইদিন রাতেই আবার দেবীকে জলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়, এটাই রীতি। শুধু সংক্রান্তি নয়, বছরের বিশেষ কিছু দিনেও দেবীকে তুলে পুকুরপাড়ে পুজো করা হয়, সেটা ভক্তদের দেখতে দেওয়া হয়না। জানা যায়, এই পুজোর শুরু হয়েছিল বর্ধমান রাজপরিবারের হাত ধরে। তবে প্রায় ১৩৬৯ বঙ্গাব্দে রাজপরিবার পুজোর ভার অর্পণ করে গ্রামের ট্রাস্টের হাতে। সেই সময় থেকেই রাজা নির্ধারিত পদগুলির অনুসারেই আজও চলে মা যোগাদ্যা পুজোর কার্যক্রম।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
মন্দিরের পুরোহিত সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “রাজ আমলে যেভাবে মন্দিরের অনুষ্ঠানগুলি হত, যে সমস্ত পুজো পার্বণ হত, সেই নিয়মে সেই ধারাকে অব্যাহত রেখেই পুজো পরিচালনা করা হয়।”এখানে দারোগা দেখভাল করেন সার্বিক প্রশাসনিক দায়িত্বের, সভাপণ্ডিত নির্ধারণ করেন পুজোর নির্ঘণ্ট ও বিধি, মালাকার প্রস্তুত করেন দেবীর ফুল ও মালা, আর নিশানধারী সেই ঐতিহ্যের বাহক, মা যোগাদ্যা জল থেকে উঠলে নিশান হাতে পথ দেখিয়ে তাঁকে নিয়ে আসেন মূল মন্দিরে। শুধু সম্পাদক পদটি নির্বাচিত হলেও, বাকি সমস্ত পদই আজও বংশানুক্রমে চলে আসছে। রাজা নেই, কিন্তু রাজতন্ত্রের সেই শৃঙ্খলা, ঐতিহ্য আর গৌরব আজও টিকে আছে ক্ষীরগ্রামের মা যোগাদ্যা পুজো কমিটিতে, যা বাংলার অতীত রাজপরম্পরার এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি।






