কিন্তু এই অসম্ভবকেই সম্ভব করে তোলাই অঞ্জনের বিশেষত্ব। ধৈর্য, নিখুঁত পরিকল্পনা ও দীর্ঘ অনুশীলনের মাধ্যমে তিনি এই ব্যতিক্রমী শিল্পকর্ম তৈরি করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বাবা কাঠের শিল্পী, সেইজন্য ছোট থেকে বাবাকে দেখেই অনুপ্রাণিত হয়ে ওঠা। তবে ইচ্ছা ছিল কিছু নতুন কিছু করার, তাই আমি এইধরনের কাজগুলো নিজের চেষ্টাতেই করি।” অঞ্জনের পরিবারে রয়েছেন বাবা ও মা। দিদির আগেই বিয়ে হয়ে গেছে। বর্তমানে অঞ্জন একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। তবে চাকরির ব্যস্ততার মাঝেও নিজের শিল্পচর্চা থেকে কখনও সরে যাননি তিনি।
advertisement
কাজের ফাঁকে কিংবা অবসর সময় পেলেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন নতুন কিছু তৈরির নেশায়। শিল্পই যেন তাঁর আত্মার খোরাক। কাঁচের বোতলের ভিতর জাহাজ তৈরির পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমানের অঞ্জন তৈরি করেন আকর্ষণীয় কাঠের ঘড়ি, আবার কখনও গোটা ডিমের উপর সূক্ষ্ম নকশা এঁকে তাক লাগিয়ে দেন। প্রতিটি শিল্পকর্মেই ফুটে ওঠে তাঁর সৃজনশীল মনন ও পরিশ্রমের ছাপ। কোনও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নয়, সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টাতেই তিনি এই শিল্পকর্ম রপ্ত করেছেন। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টা আর পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমেই আজ তিনি নিজের একটি স্বতন্ত্র পরিচয় গড়ে তুলেছেন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
তিনি এই বিষয়ে আরও বলেন, “খুবই ধৈর্যের সঙ্গে আমাকে সব কাজ করতে হয়। তবে সবাই আমার এই কাজের প্রশংসা করেন আমার এটাই বেশি ভাল লাগে।” অঞ্জনের তৈরি শিল্পকর্মের চাহিদা এখন শুধুমাত্র স্থানীয় এলাকাতেই সীমাবদ্ধ নয়। অনলাইন মাধ্যমেও তাঁর তৈরি জিনিসের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে গিফট আইটেম হিসেবে এই শোপিসগুলি বেশ জনপ্রিয়। কাঁচের বোতলের ভিতরে তৈরি জাহাজের শোপিস এক একটি বিক্রি হচ্ছে প্রায় এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা দামে। যারা ভিন্নধর্মী ও অভিনব উপহার খুঁজছেন, তাঁদের কাছে অঞ্জনের এই শিল্পকর্ম নিঃসন্দেহে আকর্ষণীয়। গ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়েই নিজের প্রতিভা ও পরিশ্রমের জোরে স্বপ্নের পথ তৈরি করে চলেছেন অঞ্জন বিশ্বাস। তাঁর মতো তরুণ শিল্পীরাই প্রমাণ করছেন, প্রতিভা কখনও শহরের গণ্ডিতে বাঁধা থাকে না, সঠিক সুযোগ ও স্বীকৃতি পেলে গ্রাম থেকেও উঠে আসতে পারে অনন্য সৃষ্টির গল্প।





