প্রায় একশো বছর ধরে ঘোড়ানাশ হাইস্কুল শুধু পড়াশোনার জায়গা হয়ে থাকেনি, হয়ে উঠেছে একটি আবেগ, একটি ঐতিহ্য। কাটোয়া শহর সহ পার্শ্ববর্তী বহু এলাকার মানুষের কাছে এই স্কুল এক পরিচিত নাম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে বেড়েছে বিদ্যালয়ের পরিসর, বদলেছে চেহারা, তবে বদলায়নি স্কুলকে ঘিরে থাকা ভালবাসা। সেই দীর্ঘ পথচলার শেষে আজ শতবর্ষে পা দিল ঘোড়ানাশ হাইস্কুল। আর এই ঐতিহাসিক মুহূর্তকে ঘিরেই যেন বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বসেছে চাঁদের হাট। শুরু হয়েছে শতবার্ষিকী উৎসব উদযাপন। প্রাক্তন ও বর্তমান পড়ুয়া, শিক্ষক, অভিভাবক সকলের মিলিত উপস্থিতিতে বিদ্যালয় যেন ফিরে পেয়েছে তার অতীতের গৌরব আর স্মৃতির রঙ।
advertisement
আরও পড়ুন: স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের নয়া বিজনেস আইডিয়া, কফির কাপে তুফানি আড্ডা! পুরুলিয়া গেলে মিস করবেন না
শুক্রবার প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানের সূচনা করেন জেলার জেলাশাসক আয়েশা রাণী এবং বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী রতন কাহার, যাঁর উপস্থিতি অনুষ্ঠানে যোগ করে আলাদা মাত্রা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বরূপ ঘোষ বলেন, “এই এলাকার শিক্ষানুরাগী যাঁরা স্বপ্নের আলো দেখিয়েছেন। তাঁদের আমি বিনম্র শ্রদ্ধা জানায়। এটা অত্যন্ত আনন্দের এবং গর্বের একটা দিন।”রবিবার পর্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে চলবে এই শতবর্ষ উদযাপন। তবে সবচেয়ে আবেগঘন দৃশ্যটি দেখা যাচ্ছে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণেই। একই ছাদের নীচে দাঁড়িয়ে আছেন তিন প্রজন্ম, কোথাও প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে দাদু, তাঁর পাশেই বাবা, আর সঙ্গে বর্তমান পড়ুয়া নাতি বা ছেলে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এক বিদ্যালয়, তিন প্রজন্ম, এর চেয়ে বড় মিলনমেলা আর কী হতে পারে! এই প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের দুই প্রাক্তন ছাত্র গৌতম ঘোষাল এবং মৃন্ময় সাহা বলেন, “আমরা খুবই আনন্দিত এবং গর্বিত। এটা একটা আলাদা রকম অনুভুতি। তিন প্রজন্ম এখানে পড়ছে, আমার বাবা পড়েছে আমি পড়েছি এখন আমার ছেলে পড়ছে। তাছাড়া এই সরকারি স্কুল সব দিক থেকেই ভাল ভাবে এগিয়ে চলেছে।” এই স্কুল থেকেই শিক্ষা নিয়ে আজ সমাজের নানা স্তরে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন অসংখ্য পড়ুয়া। কেউ শিক্ষক, কেউ সরকারি কর্মী, কেউ বা ব্যবসায়ী, তবু সকলের শিকড় একই জায়গায়, ঘোড়ানাশ হাইস্কুলে। তাই শতবর্ষের এই উৎসবে সকলেই যেন ফিরে এসেছেন নিজেদের শৈশব, কৈশোর আর স্মৃতির ঠিকানায়।





