সূত্রের খবর, কাটোয়া ১ ব্লকে মোট ২৮৮টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। এই কেন্দ্রগুলিতে শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি প্রসূতি ও শিশুদের জন্য পুষ্টিকর রান্না করা হয়। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ৭১টি কেন্দ্রের নিজস্ব পাকা ভবন রয়েছে। বাকি ২১৭টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র কারও বাড়ির উঠোনে, কোথাও গোয়ালঘরে, আবার কোথাও ক্লাব ঘর, পার্টি অফিস বা ঠাকুরমণ্ডপে চলছে।
advertisement
আরও পড়ুনঃ ভাগীরথীর বিভিন্ন এলাকা জুড়ে আচমকা তল্লাশি! দিনভর খোঁজাখুঁজি করল বন দফতর, বর্ধমানে কী হল জানুন
অভিযোগ, অনেক জায়গায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্না হচ্ছে কলাতলায় কিংবা রাস্তার ধারে অস্থায়ী ছাউনির নীচে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না করতে বাধ্য হচ্ছেন কর্মীরা। এতে শিশু ও প্রসূতি মায়েদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়ছে বলেই মত অভিভাবকদের।
কাটোয়া-১ ব্লকের আলমপুর অঞ্চলের গাঁফুলিয়া গ্রামের মাঝিপাড়া ১৮৮ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি চলছে একটি ক্লাব ঘরে। অথচ রান্না করতে হয় কিছুটা দূরে রাস্তার ধারে একটি কলাতলায়। এই কেন্দ্রে শিশু ও প্রসূতি মা মিলিয়ে মোট ৩৪ জনের জন্য রান্না হয়। ক্লাবে কোনও অনুষ্ঠান থাকলে সেদিন বন্ধ রাখতে হয় পঠনপাঠন। একই অঞ্চলের আলমপুর গ্রামের হাজরাপাড়ায় অবস্থিত ৪৪ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন ধরেই একটি সিপিএম পার্টি অফিসে চলছে। এখানে শিশু ও প্রসূতি মা মিলিয়ে মোট ৬০ জনের রান্না হয়। রান্নার জন্য ব্যবহার করা হয় বাইরে একটি ছোট্ট চালাঘর।
কেন্দ্রের সহায়িকা রীতা রুদ্র বলেন, “এটা একটা পার্টি অফিস, যেখানে রান্না হচ্ছে। আমাদের খুবই অসুবিধা হয়, বর্ষাকালে জলে ভিজে রান্না করতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই চলছে। এবার এই সমস্যার সমাধান সত্যিই দরকার।” অন্যদিকে, আলমপুর গ্রামের হরিসভাতলায় অবস্থিত ২২৫ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পরিস্থিতি আরও করুণ। পরিত্যক্ত একটি মাটির বাড়ির পিছনে ছোট্ট জায়গায় রান্না করতে হয় কর্মীদের। ঠাকুরমণ্ডপের আটচালায় চলে শিশুদের পঠনপাঠন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এই কেন্দ্রে মোট ৩০ জনের জন্য রান্না করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের প্রশ্ন, শিশুদের জন্য কবে গড়ে উঠবে পাকা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র? কেন আজও মৌলিক পরিকাঠামোর অভাবে ভুগছে শত শত কেন্দ্র? সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, অধিকাংশ এলাকায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র নির্মাণের জন্য উপযুক্ত জায়গা না পাওয়াতেই সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে রয়ে গিয়েছে। এই বিষয়ে কাটোয়া-১ ব্লকের সিডিপিও দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা পরিস্থিতির কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। পাশাপাশি স্থানীয় স্তরেও সমস্যা সমাধানের বিষয়ে জানানো হয়েছে।” কাগজে-কলমের আশ্বাসের বাইরে কবে বাস্তবে শিশুদের জন্য নিরাপদ ও স্থায়ী অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র গড়ে উঠবে, সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন এলাকার অভিভাবকরা।





