‘বেঙ্গল পেজেন্ট লাইফ’ বা ‘ফোক টেলস অফ বেঙ্গল’-এর মতো কালজয়ী গ্রন্থের স্রষ্টা লালবিহারী দে। ১৮২৪ সালে পূর্ব বর্ধমান জেলার সোনাপলাশী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তখনকার দিনে সামান্য ইংরেজি জ্ঞান ও ইউরোপীয়দের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যাপক সুযোগ এনে দিত। তাই রাধাকান্ত দে তাঁর পুত্র লালবিহারীকে ভর্তি করেন কলকাতায় আলেকজান্ডার ডাফ প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। পরবর্তীকালে ১৮৪৩ সালে খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত হন তিনি এবং ১৮৫১ সালে চার্চের ধর্ম যাজক রূপে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৮৫৫ সালে তিনি উন্নীত হন রেভারেন্ড পদে। ইংরেজি ও ভাষা ও সাহিত্যে ছিল তার অগাধ পাণ্ডিত্য। লিখেছেন একাধিক বই। তিনি ছিলেন একাধারে সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও ধর্মযাজক।
advertisement
আরও পড়ুন: পৌষমেলা শুরুর দিনেই বড় ধাক্কা বিশ্বভারতীর! আদালতে জুটল তিরস্কার, জরিমানা! জেলা প্রশাসনকেও ভর্ৎসনা
পরাধীন ভারতবর্ষে বসে তিনি যেভাবে বাংলার কৃষকদের জীবনসংগ্রাম আর রূপকথাকে সাবলীল ইংরেজিতে তুলে ধরেছিলেন, তা আজও দেশে-বিদেশে প্রশংসিত। চার্লস ডারউইনের মতো ব্যক্তিত্বও তাঁর লেখার প্রশংসা করেছিলেন। অন্যদিকে বাঙালির নবজাগরণের অন্যতম অগ্রপথিক রাজা রামমোহন রায় যে বাঙালি সমাজ, ধর্ম সংস্কার ও শিক্ষার আলোকবর্তিতা প্রজ্জ্বলন করেছিলেন, তাঁকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন ঊনবিংশ শতকের কয়েকজন কৃতি পুরুষ। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন রেভারেন্ড লালবিহারী দে। তবুও তাকে প্রায় ভুলতে বসেছে বর্তমান প্রজন্ম। বর্ধমানে তার স্মৃতি বলতে রয়েছে রেভারেন্ড লালবিহারী দের স্মরণি ও রেভারেন্ড লালবিহারী দে স্মৃতি পাঠাগার। সেই পাঠাগারও দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে বন্ধ।
পনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
পড়ে রয়েছে দোতলা ভবন, নানান বই, কম্পিউটার-সহ বিভিন্ন শিক্ষা সামগ্রী। গ্রামবাসীদের দাবি, বর্তমান প্রজন্মকে মোবাইল থেকে সরিয়ে বইমুখী করতে খুবই প্রয়োজন গ্রামে একটি লাইব্রেরির। তাই অবিলম্বে এই লাইব্রেরি খোলার ব্যবস্থা করা হোক। গ্রামের বাসিন্দা জ্যোতিপ্রকাশ ব্যানার্জি বলেন, এই লাইব্রেরিতে বহু দুষ্প্রাপ্য বই রয়েছে। আগে মাঝেমধ্যে এই লাইব্রেরি খোলা হলেও বর্তমানে লাইব্রেরিয়ানের অভাবে তা পুরোপুরি বন্ধ।
তিনি বলেন, সরকার যদি লাইবেরি খোলার উদ্যোগ না নেয়, গ্রামবাসীরা লাইবেরি খোলার উদ্যোগ নেবে। বাংলার গ্রামীণ সমাজ আর কৃষকের কথা বিশ্বসাহিত্যে ঠাঁই করে দিয়েছিলেন যে মানুষটি, আজ তাঁরই স্মৃতিধন্য পাঠাগারটি নিভৃতে ধুঁকছে অবহেলায়।





