পূর্ব বর্ধমানের কালীনগর ছাড়াও উদয়গঞ্জ, গয়েশপুর, কলডাঙা, নতুনচরের ছেলেমেয়েরা এখানে এসে পড়াশোনা করত। কিন্তু ২০১৫ সাল থেকেই শুরু হয় ধস। একজন শিক্ষকের মৃত্যু, অন্যদের অবসর এবং অবশেষে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রধান শিক্ষক মদনমোহন পাত্রের বিদায়। সব মিলিয়ে এখন স্কুলটি পুরোপুরি শিক্ষকশূন্য। পড়ুয়াদের বাধ্য হয়ে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দিয়ে দেওয়া হয়। আর তখন থেকেই স্কুলের মূল ফটকে ঝুলছে তালা। কালীনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাসুদেব সরকার বলেন, “শিক্ষকের অভাবে স্কুলটা বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। এই নিয়ে গ্রামবাসী সহ আমরাও অনেক জায়গায় জানিয়েছি, কিন্তু কিছুই হয়নি। এখন এখানে অসামাজিক কার্যকলাপ বেশি হয়।”
advertisement
আরও পড়ুন: কাটোয়ায় বিস্ফোরণ…! মৃত ১, খবর পেয়েই যা করলেন রাষ্ট্রপতি সম্মানিত বাউল শিল্পী
সবচেয়ে বড় সমস্যা কালীনগর মূল জেলার সঙ্গে বিচ্ছিন্ন। ভাগীরথী পেরিয়ে যেতে হয় ধাত্রীগ্রামের কোয়ার্টার ঘাট হয়ে। বর্ষাকালে নদী ফুলেফেঁপে উঠলে ছেলেমেয়েদের বুক সমান জল ঠেলে বা নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যেতে হয়। কেউ যায় ধাত্রীগ্রামে, কেউ কৃষ্ণদেবপুরে। অনেকেই পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে। কেউ কেউ পরিবার চালাতে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে শ্রমিকের কাজ নিতে। স্থানীয়রাও এতে হতাশ হচ্ছেন। এদিকে স্কুল ভবনের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। শ্রেণীকক্ষের দরজা, ফ্যান, বেঞ্চ-টেবিল সবই ভেঙে পড়েছে। মিড-ডে মিল ঘরে জমেছে আবর্জনার স্তূপ।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
স্থানীয়দের অভিযোগ, এখন ওই পরিত্যক্ত ভবনে আড্ডা দিচ্ছে কিছু বেকার যুবক, বেড়ে চলেছে অসামাজিক কাজকর্ম। যদিও এ বিষয়ে কালনার মহকুমা শাসক শুভম আগরওয়াল জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন এবং শিক্ষক নিয়োগ হলে স্কুল আবার চালু করা হবে। চারটি গ্রামের শিক্ষার একমাত্র ভরসা ছিল যে প্রতিষ্ঠান, তা আজ শুধুই নীরব নিদর্শন। তবে প্রশাসনিক সদিচ্ছা থাকলেই এই স্কুল ফের প্রাণ ফিরে পেতে পারে। বর্তমানে স্কুল খোলার অপেক্ষায় রয়েছেন বহু মানুষ।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী