তাঁর হাতে তৈরি কাঠের দুর্গা, গণেশ, সরস্বতী ও অন্যান্য মূর্তি শিল্পগুণের কারণে ভীষণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই প্রসঙ্গে অক্ষয় ভাস্কর জানিয়েছেন, বাবার হাত ধরেই এই কাজ শিখেছি। এখন সেই নিয়েই চলছে। বহু জায়গায় আমার তৈরি জিনিস পাড়ি দিয়েছে। ছোট থেকেই অক্ষয় বাবু তাঁর বাবার সঙ্গে দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন। এছাড়া কলকাতায় দুর্গাপুজোর সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন প্রায় ১৮ বছর ধরে। কলকাতায় বড় বড় শিল্পীদের সঙ্গে তিনি বহু কাজ করেছেন। সেই সূত্রে এখন আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তার হাতের তৈরি কাজ। এখনও দুর্গাপুজোয় বড় বড় প্যান্ডেলের থিমের মূর্তি তৈরির জন্য ডাক আসে অক্ষয়বাবুর। তিনি কাঠের দুর্গা, কাঠের গণেশ, সরস্বতী-সহ যে কোনও মূর্তি একেবারে নিখুঁত ভাবে তৈরি করতে পারেন। আর এই নিখুঁত কাজের জন্যই ধীরে ধীরে বিদেশ থেকে অনলাইনের মাধ্যমেও অর্ডার আসতে শুরু করে অক্ষয় ভাস্করের কাছে।
advertisement
তিনি এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘‘স্পেন, আমেরিকা, হল্যান্ড , কানাডাতেও আমার জিনিস গিয়েছে। অনলাইনে অর্ডার বিদেশ থেকে বেশি আসে। যে যেরকম ছবি পাঠায়, আমি সেই জিনিসই তৈরি করে দিই।’’ এখনও পর্যন্ত অক্ষয় বাবু লক্ষাধিক টাকার জিনিস বিদেশে পাঠিয়েছেন। ১ লক্ষ থেকে শুরু করে প্রায় ৪ লক্ষ টাকার কাঠের মূর্তিও তিনি বিদেশে পাঠিয়েছেন। বর্তমানে প্রায়ই বিদেশ থেকে মূর্তি তৈরির জন্য অর্ডার আসে তার কাছে। খুব সুন্দর হাতের কাজের দক্ষতার জন্য রাজ্য স্তরের একাধিক হস্তশিল্প প্রতিযোগিতাতেও কখনও প্রথম আবার কখনও দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন : মৃন্ময়ীর পাশাপাশি চিন্ময়ীকেও শ্রদ্ধার্ঘ্য, জন্মদাত্রী মাকে শ্রদ্ধা নিবেদনের অভিনব আয়োজন
অক্ষয় ভাস্কর মনে করেন, নতুন প্রজন্মের মধ্যে কাঠের শিল্পকর্ম শেখার আগ্রহ বাড়ানো দরকার।কেউ যদি তার কাছ থেকে কাঠের কাজ শিখতে চায়, তবে তিনি প্রশিক্ষণ দিতেও প্রস্তুত। তিনি আশা করেন, ভবিষ্যতে আরও অনেক তরুণ এই শিল্পে যোগ দিয়ে ভারতের ঐতিহ্যকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবে। অক্ষয় ভাস্করের এই অসাধারণ সাফল্য কেবল তার নিজের নয়, এটি পূর্ব বর্ধমান জেলার গর্ব। তার পরিশ্রম, নিষ্ঠা এবং প্রতিভা প্রমাণ করে যে সংকল্প থাকলে যে কোনও সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করা সম্ভব।
