শহরাঞ্চলে এই দৃশ্য হামেশাই নজরে পড়লেও গ্রামাঞ্চলে কিন্তু এই দৃশ্য একেবারে বিরল। তাই বাড়ির বৌ হয়ে টোটো চালাতে গিয়ে সহ্য করতে হয় পুরুষ টোটো চালকদের দাপট। কিন্তু সমাজের ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ ও টোটো চালকদের দাপটে হার মানতে নারাজ ওই গৃহীনি। সমস্যার কথা তিনি স্থানীয় প্রশাসনকেও জানিয়েছেন। কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ কুলদীপ সরকার বলেন, টোটো চালকদের কোনও সংগঠন নেই। তাই সমস্যা হচ্ছে। তবে তুলসীদেবীর যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য ব্যবস্থা করা হবে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ৪২ ‘র তুলসী রুইদাস কাঁকসা থানার আমলাজোড়া গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বাপের বাড়িও ওই এলাকায়।
advertisement
আরও পড়ুন : রঙ বদলায় চোখের পলকে, কিন্তু আজ বিরল! বহু বছর পর ক্যামেলিয়ন উদ্ধার চন্দ্রকোনায়
তাঁর স্বামী জগনাথ রুইদাস। তাঁর জন্ম থেকেই ডান হাতটি বিকল। তিনি দিনমজুর হোক অথবা চাষবাস সমস্ত কাজ করতে অক্ষম। অভাবের সংসার টানতে হিমসিম খাচ্ছিলেন তুলসীদেবী। তুলসীদেবী বলেন, আমাদের কোনও জমিজায়গা নেই। স্বামী প্রতিবন্ধী। সংসার চালাতে তিনি ইলেক্ট্রিশিয়ানের কাজ করতেন কোনওরকমে। কিন্তু একহাতে নানান সমস্যা হয়। আমি লোকের জমিতে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাচ্ছিলাম। গ্রামে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য আমি। ওই গোষ্ঠী থেকে গতবছর ৫০ হাজার টাকা ঋণ পেয়েছিলাম৷ ওই টাকা দিয়ে একটি পুরোনো টোটো কিনেছি। টোটো চালান নিজেই শিখে এখন যাত্রী বহন করছি।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন গড়ে তিনশো টাকা আয় হয়। কিন্তু গ্রামের অনেক লোকজন কটুক্তি করে বলে ‘মেয়েছেলে হয়ে টোটো চালাচ্ছে’, বাড়ির বাইরে বেরিয়ে পড়েছে’ ইত্যাদি। নানা জনে নানান তিরস্কার করে। রাজবাঁধ টোটো স্ট্যাণ্ডে টোটো নিয়ে দাঁড়ালে সেখানকার টোটো চালকরা যাত্রী তুলতে দেন না। বলে মেয়েছেলে হয়ে এখানে টোটো দাঁড় করানো যাবেনা। তবে এই সব সমস্যা থাকায় তিনি আমলাজোড়া গ্রামের মধ্যেই টোটো চালান। প্রতিদিন সকালে গৃহস্থের কাজকর্ম সেরে টোটো নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন রোজগারের আশায়।এইভাবেই স্বামী এবং সন্তানদের নিয়ে চলছে তুলসীদেবীর সংসার।





