দুর্গাপুরের বেশ কয়েকটি সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলের সামনে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে নিজেদের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ করছেন তাঁরা। কেবল বৃক্ষরোপণ করেই দায় সারেন না ওই দম্পতি, ওই সমস্ত গাছপালা পরিচর্যা করে তিল তিল করে বড় করে তুলেছেন তাঁরা। তাঁদের হাতে রোপন করা চারা গাছগুলি বর্তমানে বড় বৃক্ষের আকার নিয়েছে। রোদ ঝড়বৃষ্টিতে ওই গাছের তলায় আশ্রয় নিচ্ছেন অভিভাবক সহ পথচারীরা।
advertisement
আরও পড়ুন : পুজোর আগে বাড়ি ফেরার কথা ছিল, কিন্তু কাজের সময় নেমে এল ‘যমদূত’! পরিযায়ী শ্রমিকের করুণ পরিণতি
অভিভাবক থেকে পথচারীদের স্বস্তির পাশাপাশি পশু-পাখিরাও উপকৃত হচ্ছে বলে দাবি ওই শিক্ষক দম্পতির। দুর্গাপুরের স্টিল টাউনশিপের বাসিন্দা জীবন কিশোর চট্টোপাধ্যায় ও শম্পা চক্রবর্তী। বছর ৫৩’র জীবনবাবু পেশায় ইংরাজির শিক্ষক। পাশাপাশি তিনি একজন বিশিষ্ট লোকশিল্পী। এছাড়াও তিনি লোক বাদ্যযন্ত্রের শিক্ষক। তাঁর স্ত্রী একটি বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষিকা। শিক্ষকতার পাশাপাশি তাঁরা শিল্পাঞ্চলে নিঃশব্দে বছরের পর বছর বৃক্ষরোপণ ও সেগুলি লালন পালন করে চলেছেন।
আরও পড়ুন : আবাস যোজনায় নাম থেকেও মেলেনি বাড়ি, এবার চলে গেল শেষ সম্বল! আশ্রয় হারিয়ে হাহাকার
প্রায় ২০ বছর ধরে তাঁরা নিঃস্বার্থ ভাবে এই প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রসঙ্গত, চারিদিকে সবুজ গাছালিতে ভরা ডঃ বিধানচন্দ্র রায়ের স্বপ্নের নগরী এই দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল। বর্তমানে শিল্পাঞ্চলের পাশাপাশি দুর্গাপুর এখন এডুকেশন হাব হয়ে উঠেছে। বহু সরকারি বেসরকারি কলেজ ও স্কুল সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে এখানে। ওই দম্পতির একসময় নজরে পড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির সামনে অপেক্ষারত অভিভাবকরা চড়া রোদে কষ্ট করে দাঁড়িয়ে আছেন।
তাঁদের কথা ভেবেই প্রথম স্কুলগুলির সামনে গাছ লাগানো শুরু করেন তাঁরা। নিজেদের পকেটের টাকা দিয়ে গাছ কেনার পাশাপাশি বন দফতর থেকে গাছ সংগ্রহ করেন তাঁরা। তবে পশুপাখির কথা ভেবে ফলের গাছই বেশি রোপন করেন। তাদের এই মহৎ উদ্যোগে উপকৃত হচ্ছেন অভিভাবকরা।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বট,অশ্বত্থ ,বকুল, অমলতাস, কদম ছাড়াও আম, জাম পেয়ারা ইত্যাদি গাছ লাগিয়েছেন শহরের বহু স্কুলের সামনে। শহর ছাড়াও কাঁকসা ও দুর্গাপুর – ফরিদপুর ব্লকেও তাঁরা বৃক্ষরোপণ করেছেন। বর্তমানে তাঁদের লাগান ও পরিচর্যা করা প্রায় ৫০০ টি গাছ ইতিমধ্যেই বড় করে তুলেছেন। যেগুলি অভিভাবক সহ পথচারীদের ছাওয়া দেওয়ার পাশাপাশি পশুপাখিদের আহার ও বাসস্থান নিশ্চিত করেছে। পাশাপাশি শিল্পাঞ্চলের দূষণও রোধ করছে বলে দাবি ওই দম্পতির।