দুর্গাপুর: আগেই জানিয়েছিলেন, মেয়ের গোপন জবানবন্দির জন্য অপেক্ষা করছেন তাঁরা। তা মিটে গেলেই ‘নির্যাতিতা’ মেয়েকে নিয়ে ওড়িশা ফিরে যাবেন তিনি। মেয়েকে যাতে ওড়িশায় নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, তার জন্য সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝীর কাছে তিনি অনুরোধ করেছেন বলে রবিবার জানিয়েছিলেন ‘নির্যাতিতা’র বাবা। এবার সেই মতোই নির্যাতিতার বাবা বললেন, ”সোনার বাংলা সোনার হয়ে থাকুক। আমরা ওড়িশা চলে যাচ্ছি। আর ফিরে আসব না।’’ যদিও কবে তারা ওড়িশা ফিরে যাচ্ছেন, তা স্পষ্ট করে জানাননি। তবে, যাওয়ার আগে মেয়ের সুবিচারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি। বুধবার ফের সিবিআই তদন্তের দাবি তুললেন ‘নির্যাতিতা’র বাবা। তিনি বলেন, ‘‘সিবিআই তদন্ত তো চাই। তবে পুরোটাই বাংলার সরকারের উপর নির্ভর করছে।’’
advertisement
এদিকে, দুর্গাপুর গণধর্ষণ কাণ্ডে এবার পুলিশের হাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ ঘটনার দিন অর্থাৎ গত শুক্রবার রাতে নির্যাতিতার সহপাঠীই প্রথমে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে তাঁর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে বলে অভিযোগ৷ পুলিশ সূত্রেই এমন দাবি করা হয়েছে৷ গত শুক্রবার রাতে নিজের সহপাঠী মালদহের বাসিন্দা ওয়াসিফ আলির সঙ্গে দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের বাইরে বেরিয়েছিলেন ওই ছাত্রী৷ পুলিশের কাছে দেওয়া নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, সেদিন রাতে নিজের সহপাঠীর সঙ্গে খেতে বেরিয়েছিলেন তিনি৷
পুলিশ সূত্রের দাবি, ঘটনার দিন ওই ছাত্রীকে জোর করে জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে যায় তাঁর ওই ওয়াসিফ আলি৷ সেখানেই সে ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ৷ এই ঘটনার সময়ই ছাত্রীকে নির্যাতনে অভিযুক্ত তিনজন ঘটনাস্থলে হাজির হয়৷ ওই ছাত্রীকে নিজের পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে দেখে ফেলে তারা৷ তখনই ছাত্রীর উপরে চড়াও হয় ওই তিন জন৷ ছাত্রীর মোবাইল কেড়ে নেয় তারা৷ এই সময়ই ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যায় ছাত্রীর সহপাঠী৷ ওই ছাত্রীর ফোন কেড়ে নিয়ে শেখ রিয়াজউদ্দিন নামে এক অভিযুক্ত বার বার ওয়াসিফকে ফোন করতে থাকে৷ কিন্তু প্রথমে ফোন তোলেনি নির্যাতিতার ওই সহপাঠী৷ বারংবার ফোন করার পর শেষ পর্যন্ত ফোন ধরতে বাধ্য হয় ওয়াসিফ আলি৷
প্রথম থেকেই নির্যাতিতা ছাত্রীর এই সহপাঠীর ভূমিকা নিয়ে তদন্তকারীদের মনে সন্দেহ তৈরি হয়৷ তাকে একটানা জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ৷ মঙ্গলবার ওয়াসিফ আলি নামে নির্যাতিতার সহপাঠীকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায় পুলিশ৷ এর পরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়৷ বুধবার আদালতে পেশ করা হলে তাঁকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক৷