বৃদ্ধাশ্রমের প্রতিটি কোনে এখন চলছে পুজোর প্রস্তুতির ব্যস্ততা। যাঁরা বহুদিন হাসতে ভুলে গিয়েছিলেন, তাঁদের মুখে আজ যেন ফিরে এসেছে এক চিলতে আনন্দের হাসি। কারও চোখে জল, কারও ঠোঁটে স্মৃতিমাখা প্রশান্তি। পুজোর সাজে সাজছে শুধু আশ্রম নয়, সাজছে তাঁদের মলিন হয়ে আসা জীবনও।
আরও পড়ুনঃ ফেলে দেওয়া নারকেলের মালা পাচ্ছে মা দুর্গার রূপ! গৃহবধূর নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় ‘অনন্য’ প্রতিমা দর্শন
advertisement
বৃদ্ধাশ্রমে থাকা বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের মধ্যে পল্টু চক্রবর্তী, সত্য মাহাতোরা বললেন, ‘হোমের সাধারণ সম্পাদক নবকুমার দাস প্রতিবছর গাড়ি করে আমাদের নিয়ে যেতেন প্রতিমা দেখাতে। কিন্তু পুজো মণ্ডপে আমাদের দেখে অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নিত, ছুঁয়ে যেতে চাইত না কেউই। মনে অনেক দুঃখ হত। তবে এবার আর সেই কষ্টটা নেই। এবার মা আমাদের বাড়িতেই আসছেন’।
বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকরা
আরও পড়ুনঃ বাঁশেই হয় রোজগার! পুজোর মরশুমে দারুণ লক্ষ্মীলাভ! বিকল্প আয়ের পথ দেখাচ্ছে জঙ্গলমহল
বৃদ্ধাশ্রমে থাকা বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা আরও বলেন, ‘পরিবার তো অনেক আগেই আমাদের ভুলে গিয়েছে। ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি সবাই দূরে সরিয়ে দিয়েছে আমাদের। পুজোর সময়টাতে তাদের কথা আরও বেশি করে মনে পড়ে। যদিও এবার সেই শূন্যতাকে কিছুটা হলেও ঢেকে দিয়েছে বৃদ্ধাশ্রমে মায়ের আগমন’। এই অসাধারণ উদ্যোগের নেপথ্যে রয়েছেন মণিপুর বৃদ্ধাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক নবকুমার দাস।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
তবে তিনি একা নন, তাঁর এই মানবিক চিন্তার সঙ্গী হয়েছেন গোটা মণিপুর গ্রামবাসী। যাদের আন্তরিক সহযোগিতায় বৃদ্ধাশ্রমেই এবার সূচনা হল দুর্গাপুজোর এক নতুন অধ্যায়। এবার পুজোয় মায়ের চরণ ছুঁয়ে প্রণাম করবেন সেই সমস্ত বৃদ্ধ মা-বাবারাই, যাদের হাতেই একদিন গড়ে উঠেছিল আমাদের ভবিষ্যৎ। আর তাঁদের পাশে থাকবেন নবকুমার বাবুর মতো কিছু মানুষ, যাঁদের হৃদয়ে মানবিকতার প্রদীপ আজও দীপ্তিমান।