একটা সময় এই প্রামাণিক বাড়ির জায়গা ছিল জঙ্গলে ঘেরা এবং এই জায়গা ছিল নবাববাড়ির এলাকার মধ্যে।একদিন প্রামাণিক বাড়ির পূর্ব পুরুষ বিহারীলাল প্রামাণিককে দেবী স্বপ্নে দেখা দিয়ে জানান, এই জঙ্গলে তিনি রয়েছেন। তাঁকে উদ্ধার করে পুজো করার স্বপ্নাদেশ দেন দেবী। এরপর বিহারীলাল প্রামাণিক তার স্বপ্নে দেখা এই জায়গায় এসে দেখেন এক বৃদ্ধা জঙ্গলের মধ্যে দেবীকে পুজো অর্চনা করছেন। এরপর তিনি মনস্থির করেন এখানেই দেবীকে প্রতিষ্ঠিত করবেন। কিন্তু সমস্যা দেখা দিল এই জায়গা নবাববাড়ির। তিনি সরাসরি তৎকালীন নবাবের সঙ্গে দেখা করে দেবীর স্বপ্নাদেশের কথা জানান। নবাবও রাজি হয়ে যান তাঁকে ওই জায়গা বিক্রি করতে।
advertisement
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন”
এরপর কলকাতার বিখ্যাত মদ ব্যবসায়ী বিহারীলাল প্রামাণিক যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তৈরি করেন বর্তমান এই প্রামাণিক বাড়ি এবং দুর্গা দালান। শুরু হয় ধুমধাম করে দুর্গাপুজো।চৈত্রবাবু জানিয়েছেন, সেই পুরনো প্রথা ও রীতি মেনেই আজও পুজো হয়ে আসছে। তবে অর্থনৈতিক কারণে এখন আড়ম্বরকে কিছুটা ছোট করলেও রীতিনীতিতে কোথাও খামতি করা হয়নি। প্রামাণিক পরিবারের এই দুর্গারাধনায় নেই কোনও বলি প্রথা। পরিবর্তে সন্ধিক্ষণের ঠিক কিছুটা আগে এখানে ফল দিয়ে মালা সাজানো হয়। পুজোর পর সেই ফল নেওয়ার জন্য যে হুড়োহুড়ি ২৬৩ বছর আগে ছিল এখনও তা বর্তমান। এখানে বলি প্রথা না থাকায় ১০৮টি প্রদীপ ও পদ্মের পাঁপড়িকে সুসজ্জিত করে রাখা হয় মায়ের চরণে।
আরও পড়ুনPujo Bhog @Rs 1: মাত্র ১ টাকায় বাড়ি বসে খেতে পাবেন দুর্গাপুজোর ভোগ! অনলাইন বুকিং শুরু মহালয়া থেকে
চৈত্রবাবু জানিয়েছেন, আরও নজরকাড়া বিষয় হল প্রয়াত বিহারীলাল প্রামাণিকের সময়ে যে কাঠামোয় মায়ের চিন্ময়ী মূর্তি তৈরি হয়েছিল সেই কাঠামো আজও বর্তমান। এখনও তাতে কোনেও ক্ষতি হয়নি। অর্থনৈতিক কারণে পুজোর জৌলুস কিছুটা কমলেও, পারিবারিক ঐতিহ্য ও রীতিনীতিকে তারা ধরে রেখেছে পরম যত্নে। প্রথা, বিশ্বাস আর ভক্তির এমন যুগলবন্দীই এই দুর্গাপূজাকে করে তুলেছে অনন্য। প্রতি বছর দেবীর আগমন যেন সেই বিশ্বাসকে নতুন করে দৃঢ় করে, আর আগামীর জন্য রেখে যায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।