এই পুজোর উদ্যোক্তা মুরারিলাল নলহাটি থানার বুজুং গ্রাম থেকে এসে রামপুরহাটে এই পুজো শুরু করেন। বর্তমানে এই মন্দিরে ৩ টি মহাদেব এর মূর্তি রয়েছে যেগুলি কাশী থেকে নিয়ে আসেন তিনি। এখন প্রত্যেকদিন সেখানে নিত্যপুজো করা হয়ে থাকে। তবে আসল যে কারণে এই দুর্গাপুজোর মাহাত্ম্য অনেকটাই বেশি সেটি হলও মুরারিলাল মা দুর্গার পুজোর ঘট ভরার জন্য নিজে দাঁড়িয়ে থেকে দুটি পুকুর খনন করেন। সেই পুকুর থেকে জল নিয়ে এসে উমার আরাধনা করতেন সাধক বামাক্ষ্যাপা।প্রত্যেক বছর সেখানকার জল নিয়ে মায়ের পুজো করা হয়ে থাকে। ওই বাড়িতে এক সদস্য পুলকনাথ দত্ত জানান সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত কোনও অন্নের ভোগ নিবেদন করা হয় না মা দুর্গাকে।
advertisement
সেই থেকে আজও মহাসমারোহে দেবী দুর্গা পূজিতা হয়ে আসছেন রামপুরহাটের জমিদার স্বর্গীয় মুরারিলাল দত্ত ঠাকুরের বাড়িতে। প্রায় ২০০ বছরের প্রাচীন এই দুর্গাপুজো দেখতে পুজোর দিনগুলিতে ভিড় জমে জমিদারবাড়ির ঠাকুরদালানে। এখানে পাঁঠা বলির প্রথা নেই। মাসকলাই বলির মাধ্যমে মায়ের পূজা সম্পন্ন হয়। আর এই মন্দিরেই এসে পুজো করতেন সাধক বামাখ্যাপা।
আরও পড়ুন : বেনারস থেকে আসে বিগ্রহের বেনারসি, আলিপুরদুয়ারের দুর্গাবাড়ির পুজো সাবেকিয়ানায় ভরপুর
আর যেহেতু সাধক বামাখ্যাপা এখানে এসে পুজো করতেন তাই ভক্তরা মনে করেন এখানে এসে কোনও মনস্কামনা করলে সেই মনস্কামনা পূর্ণ হবে, এছাড়াও যে পুকুরটি খনন করে মা দুর্গার ঘটের জল নিয়ে আসা হয় সেই ঘটের জল মাথায় নিলে মনের শান্তি মেলে। সেই কারণেই পুজোর চার দিন এখানে কয়েক হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে। বীরভূম জেলা ছাড়িয়ে পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ড জেলা থেকেও বহু পর্যটক মা দুর্গার দর্শনের জন্য ছুটে আসেন। আর অন্যদিকে দশমীর দিন মা দুর্গাকে চার কাঁধে চাপিয়ে তারপর গোটা রামপুরহাট শহর ঘুরিয়ে বিসর্জন দেওয়া হয়।