এই মণ্ডপ তৈরির প্রধানশিল্পী পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুরের সৃষ্টিধর সাউ। তাঁর নেতৃত্বে বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রায় ৪০ জন শিল্পী রাতদিন পরিশ্রম করে সাজিয়ে তুলছেন পুরো মণ্ডপ। শুধু দেবী প্রতিমাই নয়, মণ্ডপের প্রতিটি কোণ, প্রতিটি অলঙ্করণ যেন ভক্ত আর দর্শনার্থীকে নিয়ে যাবে পাণ্ডব-কৌরবের যুগে, মহাভারতের বিশাল দরবারে।
advertisement
মণ্ডপের বাইরের দিক থেকে দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করবে বিশালাকার ময়ূর তোরণ। প্রায় ৭০ ফুট উঁচু ও ১১০ ফুট প্রস্থ এই তোরণকে দূর থেকে দেখলে মনে হবে বিশাল এক ময়ূর যেন তার পেখম মেলে দাঁড়িয়ে আছে। বাইরে ময়ূরের আভিজাত্য, আর ভিতরে রামোজি ফিল্ম সিটির মহাভারত সেটের ‘দরবার’। দর্শনার্থীরা মণ্ডপে প্রবেশ করলেই চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে উঠবে মহাভারতের মহিমা।
বাঙালি শিল্পীদের হাতে গড়ে উঠছে মহাভারতের দরবার
মণ্ডপ তৈরিতে বাংলার শিল্পীরা ব্যবহার করছেন ঐতিহ্যবাহী নকশা, সূক্ষ্ম কারুকার্য এবং রঙের অপূর্ব সমন্বয়। মণ্ডপের ভিতরে থাকছে প্রাসাদোপম স্তম্ভ, দরজা-জানালা, সুদৃশ্য ভাস্কর্য – সব মিলিয়ে যেন বাস্তবের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে কল্পনার জগৎ। শুধু তাই নয়, রাতে আলোর খেলা মণ্ডপটিকে রঙিন করে তুলবে। ওড়িশার ভুবনেশ্বরবাসী বাংলার শিল্পীদের এই শিল্পকর্ম দেখে ইতিমধ্যেই প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
আরও পড়ুনঃ মণ্ডপেই হবে গোটা জেলার দর্শন! এমনও আবার সম্ভব নাকি! রজত জয়ন্তীতে সেই অসাধ্য সাধন করল ‘এই’ ক্লাব
বামিখাল দুর্গোৎসব কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, ‘আমরা চাইছি দর্শনার্থীরা মণ্ডপে ঢুকেই যেন ভুলে যান তাঁরা শহরের ভিড়ে আছেন। যেন মনে হয় তাঁরা সত্যিই রামোজি ফিল্ম সিটির মহাভারত সেটের ভিতরে রয়েছেন। বাংলা শিল্পীদের হাতের কাজ ওড়িশাবাসীকে সত্যিই চমকে দিয়েছে’।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
শিল্পী সৃষ্টিধর সাউ বলেন, ‘আমাদের এই কাজ কেবল শিল্পচর্চা নয়, দুই রাজ্যের সংস্কৃতিকে একসূত্রে বেঁধে দেওয়ার এক প্রচেষ্টা। বাংলার কারুকার্য ভুবনেশ্বরবাসীর মনে যদি আনন্দ জাগায়, তবে সেটাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য’। এই দুর্গোৎসব শুধু পুজো নয়, হয়ে উঠছে শিল্পের মহোৎসব, সংস্কৃতির মেলবন্ধন। বাংলার সোনার হাতের ছোঁয়ায় ভুবনেশ্বরের বুকে মহাভারতের দরবার আবার জীবন্ত হয়ে উঠছে, আর তার সাক্ষী হতে দুর্গাপুজোর ক’টা দিনে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমাবেন বামিখালের মণ্ডপে।