রামনগর-২ ব্লকের সটিলাপুরে গ্রামের একেবারে সমুদ্রবাঁধের গায়ে বসবাসকারী গৌতম মান্না হ্যান্ড বাটিক শিল্পে দেশ-বিদেশ নাম করেছেন। তাঁর বাড়ির উঠোনে দেখা যায় ছড়িয়ে রয়েছে থান থান কাপড়।
কাপড়ে কেউ অতি যত্নে আঁকছেন নানা নকশা। কেউ ব্যস্ত মোম ও বিভিন্ন রাসায়নিক তরলে কাপড় রাঙাতে। তাদের কাজ শেষ হল তো একদল মহিলা সেই কাপড় শুকনোর জন্য মেলে দিতে নিয়ে যায় বাড়ির পাশের মাঠে। আর বাতাসের তালে ঢেউয়ের মত দোল খাওয়া সেই কাপড়গুলি থেকে ভেসে আসছে রঙের ঘ্রাণ। গৌতম মান্না কাঁচামাল আমদানি করেন বিষ্ণুপুর ও মুর্শিদাবাদ থেকে। আনা হয় হ্যান্ড বাটিক শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় সিল্ক, তসর, কটন, হ্যান্ডলুম কাপড়ের থান।
advertisement
আরও পড়ুন: নেইল আর্টের পুজোর ট্রেন্ডে গা ভাসান, দেখুন কী কী চলছে
প্রতি বছর পুজোর আগে থেকেই অর্ডার আসে। এবারও তার অন্যথা হয়নি। দুর্গাপুজো সহ বিভিন্ন উৎসবের জন্য পুজোর আগেই ভাল পরিমাণ অর্ডার এসেছে। কিন্তু অর্ডার পেলেও মুখে হাসি উঠেছে বাটিক শিল্পের সঙ্গে জড়িত থাকা কারিগরদের। কারণ টানা বৃষ্টিতে বাটিক শিল্পের কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে। বৃষ্টির কারণে কাজ করতে পারছেন না শিল্পীরা।
এবারের অসুবিধা প্রসঙ্গে গৌতম মান্না বলেন, দুর্গাপুজো উপলক্ষে ভাল পরিমাণ অর্ডার এসেছে। শহরের বিভিন্ন মেলায় এই সমস্ত জিনিস পাওয়া যায়। দিল্লি, মুম্বই, দেরাদুন, নেপাল, বাংলাদেশে ইত্যাদি জায়গাতেও বাটিকের পোশাক রফতানি করা হয়। কিন্তু বৃষ্টিতে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে, কাপড় শুকানো যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: কোহিনুরে চিতাবাঘের আতঙ্ক! জব্দ করতে দেওয়া হল ছাগলের টোপ
বাটিক শিল্পে প্রথমে এই কাপড়গুলিকে প্রয়োজন মত কেটে জলে ডুবিয়ে রাখতে হয়। তারপর শুকিয়ে নানা রকম নকশা আঁকা হয়, ফুটন্ত মোম আর রজন মিশ্রিত প্রলেপ লাগানে হয় তুলির সাহায্যে। তারপর একবার রঙের জলে ও পরের বার রংবিহীন জলে ৫ মিনিট করে মোট ৩ বারে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হয়।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
তারপর পুনরায় শুকিয়ে যতগুলি রং ব্যবহার করা হয় ততবার আলাদা আলাদা করে ন্যাপথলিন অ্যাসিড মিশ্রিত জলে ৩ বার করে ডোবাতে হয়। সব শেষে বড় পাত্রে জলে সার্ফ মিশিয়ে তাতে কাপড়টি ভিজিয়ে মোম তোলা হয়। কাপড়টি শুকনো করে, ইস্ত্রি করে তা বাজারজাত করা হয়। বারবার বৃষ্টির কারণে এই গোটা প্রক্রিয়াটি সারতে সমস্যায় পড়ছেন শিল্পীরা।