রাজা বল্লাল সেনের মেয়ে সাধনাকে বিয়ে করে ফিরবেন কাশীপুরের তৎকালীন রাজা কল্যান শেখর। সঙ্গে যৌতুক হিসেবে কালো ঘোড়া ও রাজ তরবারি। বিয়ে রানি সাধনার আবদার মতো কুলদেবীকে নিয়ে কাশীপুরের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন রাজা। রাজা বল্লাল সেনের ছেলে লক্ষণ সেন খবর পান, তাঁদের কুলদেবীকে দিদি সাধনা নিয়ে যাচ্ছেন শশুরবাড়ি কাশীপুরে। অমনি লক্ষণ সেন সেনাদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েন কুলদেবীকে ফিরিয়ে আনতে। যুদ্ধ হয় লক্ষণ সেন ও রাজা কল্যাণ শেখরের মধ্যে।
advertisement
সেই সময়ে কুলদেবীকে একটি গুহার মধ্যে রাখেন রানি সাধনা। যুদ্ধে হেরে ফিরে যান লক্ষণ সেন। এরপর কুলদেবীকে নিতে যান রানি সাধনা। ততক্ষনে কুলদেবী প্রতিষ্ঠা হয়ে গিয়েছে শবনপুরে যা বর্তমানে কল্যানেশ্বরী মন্দির। দেবী জানান তিনি এই গুহা থেকে আর যাবেন না। এই দেখে ধর্নায় বসে পড়েন রাজা কল্যাণ শেখর ও রানি সাধনা। তাঁদের দেখে দেবী সাধনাকে বলেন, "তুই কাশীপুর যা। আমি তোর পুজো নিতে কাশীপুর যাবো।"
আরও পড়ুন- একসময়ে পুতুলনাচ, নহবতে মাতত পালেদের দুর্গোৎসব! এখন মলিন এই প্রাচীন পুজো
কুলদেবীর কথা শুনে রানি সাধনা বলেন, "দেবী আপনার উপস্থিতি জানব কী ভাবে?" দেবী জানান, "আমাকে প্রতিষ্ঠা করিস। মহাষ্টমীতে একটি সোনার থালায় সিঁদুর রাখবি। আমার পায়ের ছাপ পড়বে তাতে। জানবি আমি তোর পুজো নিতে এসেছি।" সেই থেকে চলে আসছে কাশীপুর রাজ পরিবারের শ্রী শ্রী রাজ রাজেশ্বরী মাতার পুজো। তবে সেকালের মতো জাঁকজমক না হলেও সেই নিয়ম রীতি মেনে আজও চলে আসছে এই পুজো। বর্তমানে কাশীপুরের রাজ পরিবারের সদস্যরা এই পুজো চালিয়ে যাচ্ছেন। এই রাজ রাজেশ্বরী মাতার পুজো হয় ১৬ দিন ধরে। কাশীপুর রাজপরিবারের কুলদেবী এখানে অষ্টধাতুর চতুর্ভূজা। কাশীপুর রাজ পরিবারের এই পুজো দেখতে বহু মানুষ আসেন। এবারও প্রথা মেনে থালায় সিঁদুর রাখা হবে বন্ধ ঘরে। জানিয়েছেন কাশীপুর রাজ পরিবারের সদস্য সমেশ্বরলাল সিংদেও।
Indrajit Mondal
আরও পড়ুন- দুর্যোগে ভেসে গিয়েছে দোকান! অভাবের মধ্যে তিন ইঞ্চির চাল দিয়ে দেবীমূর্তি গড়ে নজির