পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার মাগুরিয়া, জ্যোত ঘনশ্যাম, নারায়ণচক, মশালচক, ডোঙাভাঙ্গা এলাকায় পুরোনো হস্তশিল্পের কিছুটা অস্তিত্ব আজও টিকে আছে। ওই এলাকার বেশ কিছু শিল্পী আজও এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। বাজারে শিংয়ের তৈরি চিরুনি বা অন্যান্য জিনিসের চাহিদা রয়েছে যথেষ্ট। তবে এখন সেভাবে পশুদের শিং পাওয়া যায় না তাই কাঁচামালের যোগান কম থাকায় অনেক শিল্পী আবার শিংয়ের পরিবর্তে কাঠ দিয়ে বানাচ্ছেন রোজকার ব্যবহারের চিরুনি। সাম্প্রতিক সময়ে wooden comb-এর জনপ্রিয়তা প্রচুর।
advertisement
মাগুরিয়া গ্রামের বিষাণ শিল্পী বলেন, তাঁর পূর্বপুরুষ শিংয়ের তৈরি বিভিন্ন জিনিস বানাতেন। তিনিও এ কাজ করেন। বাবার কাছ থেকে শিখেছিলেন এই কাজ। কাঁচামালের অভাব দেখা দেওয়ায় বর্তমানে তিনি সম্পূর্ণরূপে সিংহের পরিবর্তে কাঠ দিয়ে নানান সুদৃশ্য ঘর সাজানোর জিনিস বানাচ্ছেন।
বর্তমানে তার কারখানায় ১৫ জন শ্রমিক কাজ করেন। তার মধ্যে মহিলারাও রয়েছেন। এই কাজ করেই তাদের সংসার চালে। কাঠের তৈরি প্লেট, চিরুনি, চামচ-সহ নানান ঘর সাজানোর জিনিস তৈরি হয় সেখানে। পাশাপাশি ওই এলাকার বেশ কিছু মানুষ আজও শিং থেকে চিরুনি তৈরি করেন। তবে এই কাজটি খুবই সময় সাপেক্ষ। একটি চিরুনি তৈরি করতে ২২ ধরনের মেশিনের সাহায্য প্রসেস করে বানাতে হয়। তাই নতুন করে কোন মানুষ আর এই শিল্প শিখতে চাইছেন না। কেননা সেই ধৈর্য্য নেই আর পারিশ্রমিকও তেমন পাওয়া যায় না।
তবে অবাক হয়ে থমকে যেতে হয় বাঁশের তৈরি চিংড়ি মাছ দেখে। একেবারে অবিকল দূর থেকে বোঝার উপায় নেই। হস্তশিল্পের গুরুত্ব আলাদাই। তাই দেশে তো বটেই বিদেশেও প্রচুর রফতানি হচ্ছে প্রতন্ত গ্রাম থেকে এই ঘর সাজানোর জিনিস থেকে শুরু করে চিরুনি। আবার ভিড় জমাচ্ছেন মানুষজন হাতের কাজ চোখের দেখার জন্য।