শুধুমাত্র অভিনেতাই তো নয়, এখন মিঠুন এ রাজ্যের অন্যতম সক্রিয় বিজেপি নেতা। এবং, সেই কারণেই নাকি তাঁর প্রতি এমন বিমাতৃসুলভ আচরণ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সরকার। রবিবার এমনই অভিযোগ তুললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। প্রসঙ্গত, এই সিনেমায় মিঠুন চক্রবর্তীর পাশাপাশি অভিনয় করেছেন তৃণমূল সাংসদ দেব-ও। দিলীপের অভিযোগ, লোকসভা নির্বাচনে লড়তে না চাওয়ায় নাকি দেব-এর ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ারও চেষ্টা চলেছিল।
advertisement
আরও পড়ুন: তৈরি হয়েছে বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত, বড়দিনে আবহাওয়ার বড় আপডেট হাওয়া অফিসের
গত ১৪ ডিসেম্বর কলকাতা আন্তর্জাতিক ফিল্মোৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে রীতিমতো চাঁদের হাট বসেছিল নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। কে ছিলেন না সেখানে? অমিতাভ বচ্চন থেকে শুরু করে শাহরুখ খান, জয়া বচ্চন থেকে রানি মুখোপাধ্য়ায়। ছিলেন বাংলার দাদা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। কিন্তু, দেখা যায়নি বাঙালির আরেক দাদা মিঠুন চক্রবর্তীকে। তা নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি রাজ্য রাজনীতিতে। বিজেপি করেন বলেই কি সফল এই বঙ্গসন্তানকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত করা হল, প্রশ্ন তোলেন পদ্মশিবিরের নেতারা। এবার, সেই একই অভিযোগ শোনা গেল দিলীপ ঘোষের মুখেও।
দিলীপ ঘোষ বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেস না করলে পশ্চিমবঙ্গে কোনও সুবিধা পাওয়া যায় না। জায়গা পাওয়া যায় না। মিঠুন চক্রবর্তী যেহেতু বিজেপি করেন, তাই ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ডাক পান না। তাঁর ছবি রিলিজ করতে দেওয়া হয় না।" রবিবার বর্ধমানে বিজেপির দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসে এই মন্তব্য করেন দিলীপ ঘোষ।
এ প্রসঙ্গে বিমান বসুর কটাক্ষ, "নন্দনের নাম যে এখনও নন্দন আছে, সেটাই এখন গবেষণার বিষয়। এটা কোনও নতুন বিষয় নয়। এর আগে দেখেছি অনীক দত্তের অপরাজিত-ও স্ক্রিনিং পায়নি।"
তবে দিলীপের এমন মন্তব্যকে মোটেই গুরুত্ব দিতে চায়নি তৃণমূল। এদিন এ প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেন, "এত ছোটখাটো বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে টেনে আনা উচিত নয়, উনি হয়ত জাননেই না। নন্দনের বুকিংয়ের নিয়ম আছে। ওঁদের হয়ত জমা দিতে দেরি হয়েছিল। জানি না। তাছাড়া, আমাদের সাংসদও তো ওই সিনেমায় আছেন। দেবকে নিয়ে আমরা গর্বিত।"
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে তৃণমূলের 'দরজা খোলা' নিয়ে পাল্টা দিলীপ ঘোষ, করলেন মারাত্মক দাবি!
শুধুমাত্র মিঠুন প্রসঙ্গই নয়। এ দিন, রাজ্য রাজনমীতির আরও নানা বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে দেখা যায় দিলীপকে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার অভিযোগ তুলে ফের তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। বলেন, "বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে না দিয়ে যারা এতদিন ক্ষমতায় থেকেছে তাদের কাছ থেকে এখন জনতা হিসাব চাইছে। রাস্তা থেকে বিদ্যুৎ, আবাস যোজনা সহ কেন্দ্রের পাঠানো সব টাকা লুট হয়ে গেছে।" তিনি জানান, এ নিয়ে রাজ্যজুড়ে বিভিও অফিস ঘেরাও করার কর্মসূচি নিচ্ছে বিজেপি।
সম্প্রতি জানা গিয়েছে, আবাস যোজনার তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে পঞ্চাশ লক্ষ নাম। এ প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন,"যাঁরা প্রকৃত প্রাপক, তাঁদের নাম কেটে দেওয়া হচ্ছে। কারণ, তাঁরা গরিব মানুষ। তাঁরা তৃণমূলকে টাকা দিতে পারছেন না। বাড়ি পাওয়ার ক্ষেত্রে হয় তৃণমূলের কর্মী হতে হবে, না হলে বিশ পঁচিশ হাজার টাকা অগ্রিম দিতে হবে। যাঁরা দেননি তাঁদের নাম কেটে দেওয়া হয়েছে। আমার এলাকায় একটা পঞ্চায়েতেই সাড়ে চারশো নাম কেটে দেওয়া হয়েছে। আমরা কেন্দ্রে তালিকা পাঠাচ্ছি। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হচ্ছে। সাধারণ মানুষ অধিকার চায়। মোদি সরকার টাকা পাঠাচ্ছে। সমীক্ষা করে লিস্ট পাঠাচ্ছে। সেই লিস্ট এখানে পাল্টে দেওয়া হচ্ছে। তার জবাব চাইছে রাজ্যের মানুষ।"