পৌরাণিক মতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা হলেন বলরাম। শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে রাখিবন্ধন এবং বলরাম জয়ন্তী একই দিনে পালিত হয়। মূলত রাখি বন্ধনের আক্ষরিক অর্থ হল রক্ষার বন্ধন। অপরদিকে, বলরাম হলেন প্রাচীন প্রতিরক্ষামূলক বড় ভাই। তাই তাঁর জন্মদিন রাখি-বন্ধন উৎসবের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলা চলে।
আরও পড়ুনঃ আর পাতে পড়বে না ডিম-সহ ইলিশ মাছ! পুজোর আগে জরুরি বৈঠক ডেকে বড় সিদ্ধান্তের ঘোষণা, কিন্তু কেন?
advertisement
শনিবার ভোরে ভগবানের নিদ্রা ভঙ্গের পরেই শুরু হয় আচার-অনুষ্ঠান। সকালে বিশেষ আরতির মাধ্যমে করা হয় ভোগের ব্যবস্থা। এরপর বলরাম দেবকে অভিষেক করানো হয়। জল, মধু, দুধ দিয়ে অভিষিক্ত হন বলরাম দেব। এর পাশাপাশি সারাদিন চলবে শাস্ত্রীয় মন্ত্রাচরণ। খোল করতালের অপরূপ ধ্বনিতে ভরে রয়েছে গোটা মন্দির প্রাঙ্গন। এদিন নতুন পোশাকে সেজে ওঠেন বলরাম। সেই পোশাক এক ইসকন ভক্ত নিজের হাতে তৈরি করেছেন।
আরও পড়ুনঃ রবীন্দ্রনাথই ধ্যান-জ্ঞান! দ্বিতীয় শান্তিনিকেতন গড়ার স্বপ্ন এই যুবকের, দুর্দান্ত তাঁর কর্মকাণ্ড
দুপুরে ৫৬ ভোগের পদ আয়োজন করা হয়েছে। বলরাম দেবের জন্মদিনে আজ দেওয়া হল ক্ষীরের পায়েস। দেওয়া হল ভাদ্র মাসের পাকা তালের বড়াও। সঙ্গে বেশ কয়েক রকমের মিষ্টি। এরপর বিকেল থেকে চলবে নাম গান। তারই মাঝে আজ শেষ দিনের ঝুলন উৎসব পালন হবে জগন্নাথ মন্দিরে। গৌড়ীয় বৈষ্ণব মতে রাধা ও মদন মোহনের মূর্তি ঝুলন বেদীতে এনে পালন করা হবে ঝুলন উৎসব। সপ্তাহখানেক আগে থেকেই জগন্নাথ মন্দিরে শুরু হয়েছে ঝুলন উৎসব। রোজ সন্ধ্যা হলেই ঝুলন দেখতে কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন মন্দিরে। আজ শেষ দিনেও বাড়তি ভিড় জমার আশঙ্কা করছে মন্দির কর্তৃপক্ষ।
বলরাম জয়ন্তীর জন্যেও সকাল থেকে পর্যটকদের ঢল দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে। এমনিতেই শনি ও রবিবার ছুটির দিনে অতিরিক্ত ভিড় লেগে থাকে দিঘায়। এর সঙ্গে বলরাম জয়ন্তী ও ঝুলন উৎসব উপলক্ষে শুক্রবার রাত থেকেই বহু মানুষ দিঘায় এসে পৌঁছেছেন। মূলত এই বলরাম জয়ন্তী সামাজিক ঐক্যকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি সদাচার ও ভক্তির ভিত্তিতে জীবন যাপনকেও অনুপ্রাণিত করে। মথুরা, বৃন্দাবন, মায়াপুরের মতো স্থানগুলিতে এই বলরাম জয়ন্তী ঘটা করে পালন করা হয়।