বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎই এই অস্বাভাবিক দৃশ্য চোখে পড়ল ওল্ড দিঘার শী হক সংলগ্ন ঘাটে। বালুকাবেলার জলে ভেসে এল অসংখ্য ছোট ছোট মৃত তারা মাছ। মুহূর্তের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পর্যটক ও স্থানীয়দের মধ্যে। সৈকতের সৌন্দর্যের মাঝেই এই মৃত্যু দৃশ্য দেখে অনেকে আতঙ্কিত, আবার অনেকেই বিস্ময় চেপে রাখতে পারেননি।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোয় নতুন রূপে দিঘা! মজা এবারে আরও ১০ গুণ বেশি! বিরাট আয়োজনে সীমাহীন ফুর্তি, কী হচ্ছে জানেন?
advertisement
পর্যটকদের অভিযোগ, একসঙ্গে এত বিপুল সংখ্যক মৃত মাছ ভেসে আসায় চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা পর্যটকদের মধ্যে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। তাদের আশঙ্কা, শিশুরা কৌতূহলবশত মৃত তারা মাছগুলো স্পর্শ করছে কিংবা খেলতে খেলতে মুখে দিয়ে ফেলতে পারে, যা বড় বিপদের কারণ হতে পারে। তাই দ্রুত এই মৃত মাছগুলো সরিয়ে ফেলার দাবি তুলেছেন পর্যটক থেকে স্থানীয় বাসিন্দা সকলেই।
শুধু দুর্গন্ধই নয়, এই ঘটনার পেছনে কারণ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। অনেকেই ভাবছেন, সমুদ্রের জলে এমন কী পরিবর্তন হল যে একসঙ্গে এত তারা মাছের মৃত্যু ঘটল? কেউ কেউ এটিকে দূষণের ফলাফল বলছেন, আবার কেউ মনে করছেন টানা বর্ষণে সমুদ্রের জলের লবণাক্ততা হঠাৎ কমে যাওয়াই এ ঘটনার মূল কারণ।
ঘটনার কারণ স্পষ্ট না হলেও জীববৈচিত্র্য বিশেষজ্ঞ ও এগরা কলেজের অধ্যাপক ড. সুদীপ্ত ঘোড়াই এর মতে, একাধিক কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে। সমুদ্রের জলে দূষণের প্রভাব ক্রমশ বেড়ে চলেছে, যা সামুদ্রিক প্রাণীদের জীবন বিপন্ন করছে। অন্যদিকে বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে জলবায়ুর পরিবর্তনও সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রে প্রভাব ফেলতে পারে। সম্প্রতি টানা ভারী বৃষ্টির কারণে সমুদ্রের জলের লবণাক্ততা কমে গেছে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সমুদ্রের স্বাভাবিক লবণাক্ততা হ্রাস পেলে তারা মাছসহ অনেক ছোট সামুদ্রিক প্রাণী মারা যেতে পারে।
সৈকতে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য মৃত তারা মাছ এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। এটি কেবল একটি অস্বাভাবিক ঘটনা নয়, বরং সমুদ্রের পরিবর্তিত পরিবেশের একটি ভয়াবহ সংকেত।
পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে দিঘার ভাবমূর্তিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে। তাই এই রহস্যজনক মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সমুদ্র শহর এখন উত্তর খুঁজছে—হঠাৎ কেন ভেসে এল এত তারা মাছের মৃত্যু মিছিল?