এই দিন কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকেও আয়োজন করা হয়েছিল এই দেব দীপাবলির। পুরাণ অনুযায়ী মহাদেব ত্রিপুরাসুরের হাত থেকে দেবতাদের উদ্ধার করেছিলেন। ত্রিপুরাসুরের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেয়ে এদিন দেবতারা শিবের বাসস্থান কাশীর গঙ্গার ঘাটে প্রদীপ জ্বালিয়েছিলেন। সেই কারণে বছর কার্তিক পূর্ণিমায় পালন করা হয় দেব দীপাবলি উৎসব। মানুষের বিশ্বাস এই দিন গঙ্গার ঘটে প্রদীপ জ্বালালে দেবতারা সন্তুষ্ট হয়।
advertisement
আর এই দেব দীপাবলিতে গঙ্গার ঘাটে অন্যরকম ছবি।
আরও পড়ুন: ‘সেই দিনটা…’, অনুপমের প্রাক্তন স্ত্রী আজ থেকে পরমের ঘরণী! প্রেমের শুরুটা লুকিয়ে ‘সেই’ দিনে
দেব দীপাবলির দিন এই রকমই এক ছোট্ট শিশুকে দেখতে পাওয়া যায় উৎসবের ভিড়ে। নাম তার রজনীশ, বয়স মেরে কেটে ৭-৮। তবে মাখন নয় সে চুরি করছে প্রদীপের তেল। লোকের আড়ালে সে প্রদীপ থেকে তেল ঢেলে নিচ্ছে তার বোতলে। কী করবে সে এই তেল নিয়ে? এই প্রশ্নের উত্তরের রজনীশ যা বলল, তা শুনে যে কোনও চিন্তাশীল মানুষের কাছে দেশ, কল, রাজ্য-রাজনীতির সব বিতর্ক সব ধুয়ে মুছে যাবে। কারণ সেই ছেলেটি জলন্ত প্রদীপ থেকে তেল ঢেলে নিজের বোতল ভর্তি করছে বাড়ির রান্না হবে বলে।
আরও পড়ুন: নখ, নখের পাশের চামড়া দাঁত দিয়ে কেটে ফেলেন? এক মারাত্মক রোগের শিকার আপনি, জানুন
রজনীশের বাড়ি হাওড়ায়, রামকৃষ্ণ ঘাটের পাশের বস্তিতে। বাড়িতে রয়েছে তার মা, বাবা ও দিদি। সে প্রতি দেব দীপাবলিতে আসে গঙ্গার ঘাটে প্রদীপ থেকে তেল নিতে। ঘন্টা খানেক ধরে এইদিক ওইদিক করে এক বোতল তেল তার হয়ে যায়। আর সেই তেল দিয়েই তার মা তাদের রান্না করে দেবে।
ছোট্ট ছেলেটির উত্তরে এক নিমেষে উৎসবের রং কেমন যেন ফিকে হয়ে এসেছিল। উৎসবের মধ্যে খুঁজে পাওয়া এই ছেলেটি প্রমাণ করে দিল রাজনীতি, ধর্ম , উৎসব এই সবের আগে পেট। কারণ খিদের জ্বালা যখন ধরে তখন প্রদীপের পোড়া তেলই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য লিখেছিলেন, ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি। ঠিক তেমনই হাজারো আলোর মধ্যে পেটে খিদে নিয়ে এক গাল ভর্তি মুখে হাসি থাকা ছোট্ট রজনীশের কাছে প্রদীপের পোড়া তেলই যেন অমূল্য।
রাহী হালদার
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F