পেটের তাগিদে ওই ট্রেনে চেপে রাজমিস্ত্রি জোগাড়ের কাজে যাচ্ছিলেন তাঁর এক সঙ্গীকে নিয়ে। বিকেল বেলা শেষ ভিডিও কলে কথা হয়েছিল স্ত্রীর সঙ্গে। তার পর আর কথাই হল না। জানা যায়, মাথায় আঘাত লেগে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। বাড়িতে চার বছরের একটি সন্তান রয়েছে।
আরও পড়ুন- মৃত বেড়ে ২৬১! ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্রচুর দেহ, প্রাণহানির সংখ্যা আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা
advertisement
কী হবে ওই সন্তানের ভবিষ্যৎ, সেই প্রশ্নই এখন পরিবার পরিজনদের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। দেহ আনার জন্য বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছেন শফিকের বাড়ির লোকজন।
সফিক শ্বশুরবাড়ি বহরমপুর থেকে বাইরের রাজ্যে কাজ করতে যাচ্ছিলেন। বিকেলে স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেছিলেন। এর পর যে ব্যক্তি তাঁকে কাজের জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন, তিনিই বাড়িতে ফোন করে সফিকের মৃত্যু সংবাদ দেন।
কিন্তু ঠিক কীভাবে ঘটল এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ?
রেল সূত্রে পাওয়া শেষ খবর, প্রথমে বেঙ্গালুরু-হাওড়া এক্সপ্রেসে ধাক্কা মারে গতিতে এগোনো শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেসে। দুই ট্রেনের সংঘর্ষের পরে করমণ্ডলের একাধিক কামরা পাশের লাইনে দাঁড়ানো মালগাড়ির ওপর গিয়ে পড়ে।
কার্যত দেশলাইয়ের বাক্সের মতো উল্টে যায় একের পর এক কামরা। মালগাড়ির ওপরে উঠে যায় করমণ্ডলের ইঞ্জিন। বালেশ্বরের বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে ঘটে দুর্ঘটনা।
প্রবল আওয়াজ শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। তাঁরাই প্রথমে উদ্ধারকাজে হাত লাগান। তার পর একে একে সেখানে পৌঁছয় বিভিন্ন উদ্ধারকারী দল। আহতদের উদ্ধার করে পাঠানো শুরু হয় বিভিন্ন হাসপাতালে।
আরও পড়ুন- দুর্ঘটনার পর স্থানীয় মানুষের ভূমিকা কেমন ছিল? ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর মরমী বার্তা
চারিদিকে রক্ত, মৃত্যু, হাহাকার, শয়ে শয়ে মৃত্যুর আশঙ্কা। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ট্রেনযাত্রীদের গ্যাস কাটারের সাহায্যে বিভিন্ন ট্রেনের কামরা কেটে বের করে আনা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, কারও মাথা ফেটেছে, তো কারোর হাত কেটে ঝুলছে, আবার খানিক এগোলেই দেখা গিয়েছে মৃতদেহের সারি। সব মিলিয়ে মৃত্যুমিছিলের মাঝে যেন জলজ্ব্যান্ত নরক হয়ে উঠেছিল গোটা এলাকা। আর কামরাগুলো থেকে শুধু ভেসে আসছে আহতদের আর্তনাদ।