ক্রান্তীয় জলবায়ুর প্রভাব ভারতে, দেশে মোট ছয়টি ঋতু। তবে বর্তমান দিনে পারিপার্শ্বিক নানা কারণে সেই ঋতুর মধ্যে একাধিক ঋতুর প্রভাব খুব একটা লক্ষ্য করা যায় না। কখনও ভারী বৃষ্টি আবার কখনও বাড়ছে তাপমাত্রা। শীতে যেতে না যেতেই প্রবল গরম পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে ভারতে। আগামীতে বাড়ছে খরার প্রবণতা। উন্নততর গবেষণা ও কৃষি ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের কারণে ভারত শস্য-শ্যামলা হলেও আগামীতে কৃষি ক্ষেত্র-সহ বনাঞ্চলে ভয়ংকর বিপদ। কৃষি ক্ষেত্রে কতটা প্রভাব পড়বে? আইআইটি খড়গপুরের সেন্টার ফর ওশিয়ান, রিভার, অ্যাটমোস্ফিয়ার এন্ড ল্যান্ড সায়েন্স(কোরাল) বিভাগের তিন বিজ্ঞানী জয়নারায়ন কুট্টিপূরথ, রাহুল কাশ্যপ এবং বিকাশ কুমার প্যাটেল সম্প্রতি গত দুই দশকে প্রকৃতির নানা পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন। বিজ্ঞানীদের মতে ২০০০ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ভারতের শুকনো আবহাওয়া ও জলের অভাবের কারণে খরা পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে। যা বেশ আশঙ্কাজনক। এর ফলে গ্রীষ্মের সময়ে এসে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ এবং মাটিতে সঞ্চিত জলের ভান্ডারের পরিমাণ কমতে শুরু করেছে।
advertisement
আরও পড়ুন: ‘এসআইআর করতে না দিলে ভোট হবে না’, রাষ্ট্রপতি শাসন জারির হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর!
সম্প্রতি বিজ্ঞান পত্রিকা ‘নেচার’-এর প্রকাশনা সংস্থার অধীনস্থ কমিউনিকেশন্স এন্ড এনভায়রনমেন্টে সম্প্রতি তিন বিজ্ঞানীদের গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। প্রসঙ্গত আগের তুলনায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে কৃষিক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। বেশি জমি আগের থেকে সবুজ হয়েছে। তবে যা শুধুমাত্র মানব প্রযুক্তির কারণে। আইআইটি খড়্গপুরের অধ্যাপক তথা বিজ্ঞানী জয়নারায়ণ কুট্টিপূরথ বলেন, “বাতাসে জলীয় বাষ্প এবং ভৌম জল স্তর অর্থাৎ জলে সংকুচিত হয়ে আসছে দেশে। যা প্রভাব ফেলবে কৃষিকাজের জমিতে এবং বনাঞ্চল সম্প্রসারণে, যা খুব বিপদজনক পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েছে”।
অধ্যাপকদের দাবি, গ্রীষ্মকালে দেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধির পাশাপাশি সমুদ্রের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে মার্চ মাস থেকে শুরু হচ্ছে গরম। আর এতেই দেশের বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে। এর ফলে বর্ষার সময়ও অসম বন্টন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যা সরাসরি প্রভাব পড়ছে পরিবেশের সবুজের উপর। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, চলতি বছর বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হলেও বিভিন্ন জেলাতে গড় বৃষ্টির পরিমাণ অনেকটা কমেছে।
অধ্যাপকরা জানিয়েছেন, আগামী দিনে প্রাকৃতিক ঘটনার বৈপরীত্য দেখা যাবে, যা সরাসরি প্রভাব পড়বে মানুষের উপর। তবে গবেষণায় প্রমাণ করা হয়েছে যে গত দু’দশকের ঘটনা ব্যতিক্রমী নয়, আগামী দিনে গরমের পরিমাণ বাড়বে এবং খরার প্রাবল্য বৃদ্ধির সরাসরি প্রভাব পড়বে সবুজের উপর। যার পরিণতি খরার প্রবণতা। মানুষকে সাবধান এবং সচেতন হওয়ার বার্তা দিয়েছেন অধ্যাপকেরা।
