বিশ্বভারতীর স্বনামধন্য এসরাজ শিল্পী ছিলেন অশেষচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। বরাবরই বিশ্বভারতীর শিল্পীদের হাতে তৈরি এসরাজ-এর চাহিদা যথেষ্ট মাত্রায় থাকে। সেখানেই এবার কমলাকান্ত লাহা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এসরাজ তৈরি শুরু করছেন। তাঁর বাড়ি মূলত শান্তিনিকেতনে। শিল্পীদের মধ্যে এই এসরাজ চাহিদা যথেষ্ট মাত্রায় দেখা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: পাশের বাড়ির বোনের জন্মদিনে আনন্দ করতে গিয়ে জীবনটাই শেষ হয়ে গেল!
advertisement
কোন পদ্ধতিতে তৈরি করা হচ্ছে এই এসরাজ? এই বিষয়ে কমলাকান্ত লাহা জানান, তুন কাঠ, উট আবার কোনও ক্ষেত্রে মহিষের হাড়ের ব্রিজ, ঘোড়ার লেজের চুল এই সমস্ত নানান জিনিস ব্যবহার করে অত্যাধুনিক মানের এসরাজ তৈরি করছেন৷ তাঁর কাছে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে কানাডা, ইতালি, ফ্রান্স, আমেরিকা এই সব দেশ থেকেও শিল্পীরা আসেন এসরাজ মেরামত করতে বা কিনতে।
অনেকেরই কৌতুহল, কী থাকে একটি এসরাজ-এর মধ্যে? এই বিষয়ে কমলাকান্ত বাবু জানান, মূলত কাঠ দিয়ে তৈরি এই বাদ্যযন্ত্রের সুরের মূল বাজ-এর মধ্যে তার থাকে মোট তিনটি৷ এছাড়া মূল তিনটি তারকে সঙ্গত দিতে আরও ১৮ টি তার থাকে৷ সব মিলিয়ে মোট ২১ টি তার থাকে। এর পাশাপাশি ২১ টি পর্দা থাকে (বিশ্বভারতী ঘরানার ক্ষেত্রে)। সুর বাঁধতে কান বা নিস্তির থাকে মোট ১৫ টি৷ তারের উপর ছড় দিয়ে ঘষে সুরের সৃষ্টি হয়৷ মূলত তুন কাঠ দিয়ে এসরাজ তৈরি হয়। এছাড়াও, বার্মাটিক, সেগুন কাঠ দিয়েও এসরাজ তৈরি করা হয়৷
আরও পড়ুন: মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে ঘুমের মধ্যেই দুই নাবালিকা মেয়ে সহ মায়ের মৃ*ত্যু
এসরাজের জন্ম ভারতীয় উপমহাদেশেই৷ তবে তা খুব প্রাচীন বাদ্যযন্ত্র নয়৷ আনুমানিক দুই থেকে তিনশো বছর আগে এই যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়েছে। এখন প্রশ্ন হল একটি এসরাজ তৈরি করতে কতদিন সময় লাগে এবং এর দাম কত হতে পারে?
একটি বড় আকারের এসরাজ তৈরিতে কমপক্ষে তিনমাস সময় লাগে৷ তবে একটি এসরাজ তৈরিতে বেশ কিছুদিনের ব্যবধান প্রয়োজন হয়৷ কারণ পালিশের পর শুকনোর জন্য ফেলে রাখতে হয়। তাই একসঙ্গে অনেকগুলি এসরাজ তৈরি করলে সময় কম লাগে। বিশ্বভারতী ঘরানার এসরাজের দাম ৫৮ থেকে ৬০ হাজার টাকা ৷ আবার এই এসরাজ যদি বিদেশে পাড়ি দেয়, তাহলে পরিবহণ খরচ ও কর জুড়ে দাম হয়ে যায় ৮৫ থেকে ৯০ হাজার টাকার কাছাকাছি।