ত্রিকোণ প্রেমের জেরে ২০২০ সালের ১১ই অক্টোবর চুঁচুড়া শহরের জনবহুল এলাকা রায়ের-বেড় থেকে বছর তেইশের যুবক বিষ্ণু মালকে বাড়ির সামনে থেকে মোটর-বাইকে করে তুলে নিয়ে যায় হুগলির কুখ্যাত দুষ্কৃতী বিশাল দাস ও তাঁর সাগরেদরা। সেই রাতেই চাঁপদানি এলাকায় একটি বাড়িতে বিষ্ণুকে নৃশংসভাবে হত্যা করে বিশাল। ধড়-মুণ্ডু আলাদা করে দেহ ছয় টুকরো করে, পরে প্যাকেটে করে শেওড়াফুলি ও বৈদ্যবাটির বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়।
advertisement
এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থাকা ৯ অপরাধীকে পরবর্তী কালে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিশাল দাস ছাড়াও অভিযুক্তরা হল রামকৃষ্ণ মণ্ডল, রথীন সিংহ, রাজকুমার প্রামানিক, রতন ব্যাপারী, বিনোদ দাস, বিপ্লব বিশ্বাস, মান্তু ঘোষ ও সেখ মিন্টু।
পুলিশি জেরায় বিষ্ণুর দেহের খণ্ডিত অংশ কোথায় কোথায় আছে তাঁর সন্ধান দেয় দুষ্কৃতিরা। পুলিশ বিষ্ণুর সেই খণ্ডিত দেহাংশ উদ্ধার করলেও বিশাল কে না ধরা পর্যন্ত বিষ্ণুর কাটা মুণ্ডুর সন্ধান পাওয় যায়নি।
পরে ক্যানিংয়ের জীবনতলা থানা এলাকায় ৩ রা নভেম্বর কয়েকজনকে গুলি চালিয়ে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে বিশাল।পরে চন্দননগর পুলিশ তাকে নিয়ে আসে চুঁচুড়া থানায়। বিশালই সন্ধান দেয় বিষ্ণুর কাটা মুন্ডু কোথায় ফেলেছে। তারপর বৈদ্যবাটি খালের ধার থেকে প্লাস্টিকে মোড়ানো অবস্থায় মুন্ডু উদ্ধার করে পুলিশ।
চুঁচুড়া শহরে এই নারকীয় হত্যার নিন্দায় সরব হয় সব অংশের মানুষ। যতবারই দুষ্কৃতি বিশাল দাস ও তাঁর সাগরেদদের আদালতে তোলা হয়েছে ততবারই সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ প্রতিবাদে সরব হয়েছে। এই নারকীয় হত্যার দোষীদের ফাঁসির দাবীতে।
আজ “বিষ্ণু মাল হত্যাকাণ্ড” মামলার চুড়ান্ত রায়দানে আদালতের সামনে অপরাধী ব্যক্তিদের ফাঁসির দাবীতে জড়ো হয় বহু মানুষ। কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় আদালত চত্বর। রায় ঘোষনার পর বিষ্ণুর পরিবার, তার মা, বাবা, বোন কাঁদতে থাকে।