শুধু পুজো নয়, করোনা পাল্টে দিয়েছে মানুষের নিত্যদিনের জীবনধারাকেও। প্রতিবছর রঘুনাথপুরের এই কুমোরটুলিতে এই সময় মৃৎশিল্পীরা কথা বলার সময় পেতেন না। এমনকি বাড়ির মহিলারাও সকালে নিজেদের বাড়ির কাজ শেষ করে লেগে পড়তেন মা দুর্গাকে সাজানোর কাজে। কিন্তু এখন কুমোরটুলিতে গেলেই দেখতে পাওয়া যাচ্ছে শুধুমাত্র খড়ের কাঠামো পড়ে রয়েছে। সেটাও আবার তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। এখনও শেষ হয়নি মাটির কাজ। আর এইসব নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন সূত্রধর পরিবারের মৃৎশিল্পীরা।
advertisement
মৃৎশিল্পী অশোক সূত্রধর, গৌড় সূত্রধর ও নিতাই সূত্রধর বলেন, করোনার ফলে এই বছর তেমন কাজ নেই। মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে অর্থসংকট। ফলে আগের তুলনায় কাজ অনেক কম রয়েছে। অন্য বছর প্রায় ৬০ টির উপর প্রতিমা বানানোর কাজ করেছি। এবছর তা কমে ৪৫ টি। তার ওপর আবার আগের বছরের তুলনায় এই বছর দামের পার্থক্য অনেক। আগের বছর যে সমস্ত মন্দির বা প্যান্ডেলে প্রতিমার দাম ছিল ১৭ হাজার থেকে শুরু করে ২৫ হাজার টাকা। এবছর তা নেমে এসেছে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকায়। আগের তুলনায় প্রতিমা এবছর অনেক ছোট হচ্ছে। পুজোয় নেই কোনও জৌলুস। শুধুমাত্র নিয়ম রক্ষার জন্য ছোট মূর্তি বানিয়ে সমস্ত পুজো কমিটি এই বছরের পুজো সারতে চাইছেন। দুর্গা পুজোর সময় আমাদের সারা বছরের খরচ উঠে আসতো। কিন্তু এবছর অর্ধেকেরও নিচে নেমে গেছে আয়। ফলে কীভাবে চলবে সেই নিয়ে চিন্তায় পড়তে হচ্ছে আমাদের। এটাই আমাদের মূল পেশা। তাই এই বছর যা অবস্থা তাতে প্রতিমা করার পাশাপাশি অন্যান্য কাজের সন্ধান করতে হবে আমাদের। মহালয়া পেরিয়ে দেবীপক্ষের সূচনাও হয়ে গেল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সমস্ত পুজো কমিটির পক্ষ থেকে আসেনি মূর্তি গড়ার বায়না। এর পরবর্তী পুজোতেও যদি একই অবস্থা হয় তাহলে বেশ সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে আমাদের৷ দুঃখের সঙ্গে বলছেন প্রতিমা শিল্পীরা৷