সেই সময় অশোকনগর বিধানসভা এলাকায় বেশ কয়েকটি কূপ খনন করে সেখান থেকে খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস তুলে তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। বাইগাছি এলাকার ওএনজিসির প্ল্যান্টে তৎকালীন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী এসে উন্নতমানের তেল ও গ্যাস উত্তোলন এর সঙ্গে সঙ্গে এলাকার আমূল পরিবর্তন, ও বিপুল কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতিও দিয়ে যান। পরবর্তীতে ওএনজিসির পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দৌলতপুর ভুরকুন্ডা সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় বিপুল পরিমাণ খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান মেলে। প্ল্যান্ট তৈরি করে কাজ শুরু হলেও, গত কয়েক বছর হল সেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
advertisement
বর্তমানে অশোকনগরসহ বিস্তীর্ণ এলাকার ওএনজিসির এই প্লান্টগুলি বন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফলে জন্মেছে মানুষ সমান আগাছা, পড়ে থেকে জং ধরেছে মেশিন গুলিতেও। এখন তালা বন্ধ অবস্থায় রয়েছে ওএনজিসির এই কেন্দ্রেগুলি। শুধুমাত্র নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া আর কোনও কর্মীদেরই দেখা মেলে না বিগত কয়েক বছরেরও বেশি সময় ধরে বলেই জানালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। একসময় এই তেল উত্তোলন কেন্দ্রগুলিকে দেখেই আশায় বুক বেঁধেছিলেন এলাকার বহু মানুষজন। কেউ দিয়েছিলেন জমি, কেউ ভেবেছিলেন কর্মসংস্থান মিলবে ওএনজিসির প্রজেক্টে। কেউ আবার ওএনজিসি প্ল্যান্টের বাইরে দিয়েছিলেন দোকান। ভালো মতন চললেও, পরবর্তীতে প্লান্টগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় দোকানও। ফলে অশোকনগর বিধানসভা এলাকার এই সমস্ত স্থানগুলিতে আধুনিক পরিকাঠামো সহ কর্মসংস্থানের যে আশা দেখেছিল মানুষজন তা বিশ বাও জলে চলে যায়।
তবে কেন বন্ধ পড়ে রয়েছে ওএনজিসির এই প্ল্যান্টগুলি? কেন এই কেন্দ্রেগুলি থেকে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন করা যাচ্ছে না! সে বিষয়টি নিয়েই রাজ্যসভার সাংসদ সমীক ভট্টাচার্য সংসদে প্রশ্ন তুললে, তার উত্তরে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হার্দিপ সিং পুরী জানান, অশোকনগর সহ তৈল উত্তোলন কেন্দ্র গুলি চিহ্নিত করা গেলেও বিগত ৪ বছর ধরে রাজ্য সরকারের অসহযোগিতা এবং উদাসীনতার কারণে এখনও পর্যন্ত তেল উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি। ফলে কেন্দ্রের তরফে নানাভাবে রাজ্য সরকারের সহযোগিতা চাওয়া হলেও তা না মেলায় থমকে রয়েছে ওএনজিসির এই প্রজেক্ট। ফলে এলাকার ব্যবসায়িক উন্নতি ও কর্মসংস্থানের যে আশা দেখেছিলেন স্থানীয় মানুষজন তা এক প্রকার রাজ্য সরকারের জন্যই থমকে রয়েছে বলেই দাবি করেন রাজ্যসভার এই সাংসদ।
যদিও বিষয়টি নিয়ে অশোকনগর কল্যাণগড় পৌরসভার পৌর প্রধান প্রবোধ সরকার জানান, রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে খুবই তৎপর ছিল, এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক টাকার বিনিময় তাদের জায়গা দিয়েছিল। গত দু’বছর ধরে তাদের তরফে কোনরকম যোগাযোগ করা হয়নি বলেও জানান পৌরপ্রধান। যদি যোগাযোগ করা হয় সে ক্ষেত্রে তারা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও জানান। তবে যত দ্রুত সম্ভব কেন্দ্র রাজ্য সংঘাত মিটে চালু হোক ওএনজিসির এই প্রকল্প গুলি পাশাপাশি কর্মসংস্থান হোক স্থানীয় এলাকার মানুষদের এমনটাই এখন চাইছে অশোকনগর সহ জেলার মানুষজন।
Rudra Narayan Roy