সোনার দোকানের মালিক কৃষ্ণ গোপাল কর্মকার জানান, গতকাল আনুমানিক সকাল ১১ টা নাগাদ এক অপরিচিত ব্যক্তি তাঁর দোকানে আসেন। দোকানে ঢুকেই তিনি জানতে চান, ৪০ হাজার টাকার মধ্যে কোনও সোনার কানের দুল আছে কিনা। কৃষ্ণ গোপাল বাবু জানান, সেই দামে সোনার কানের দুল পাওয়া সম্ভব নয়, তবে অন্য অলংকার পাওয়া যেতে পারে। এরপর ওই ব্যক্তি দোকানে থাকা সোনার বিভিন্ন অলংকার দেখতে চান। দুটি গলার হার পছন্দও করেন তিনি।
advertisement
আরও পড়ুন: আইআইটি খড়গপুরের মুকুটে আবারও নতুন পালক! ‘এই’ অধ্যাপক পাচ্ছেন বিশেষ সম্মান, জানলে গর্বে বুক ফুলবে
এরপর প্রতারক ব্যক্তি কৌশলে কথোপকথনের মাঝে আঙুল দেখিয়ে বলেন, সামনেই বাজারে তার একটি মুদিখানার দোকান রয়েছে। কিছুক্ষণ পরেই তিনি নিজের সঙ্গে থাকা একটি ভারী বালা দোকানদারকে দেখিয়ে জানান, এটি সোনার তৈরি এবং তিনি চান সেটিতে গালা ভরিয়ে নিতে। তিনি বলেন, “এই বালাটা আপনি আপাতত রেখে দিন, আমি বাড়িতে গিয়ে পরিবারের পছন্দমতো দুটি হার দেখিয়ে একটি রাখব, অন্যটি ফেরত দিয়ে দেব।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
নদিয়ার ওই দোকানদার কৃষ্ণ গোপাল বাবু সরল মনে ভাবেন, যেহেতু ওই ব্যক্তি তাঁর কাছে একটি সোনার বালা বন্ধক রাখছেন, তাই কিছুক্ষণের জন্য দুটি হার দেওয়াতে অসুবিধা নেই। যদিও কষ্টিপাথর কিংবা অন্যান্য রাসায়নিক উপাদান দিয়ে তিনি পরীক্ষা করেননি সোনার কিনা অন্য আরেক মহিলাকে তার সঙ্গে কথা বলতে ব্যস্ততা থাকার কারণে। সোনার মতো একটি মূল্যবান জিনিস সামনের দোকান থেকে দেখিয়ে নিয়ে আসার পিছনে লুকিয়ে রয়েছে বড় ফন্দি সেটা তিনি বুঝতে পারেন নি। তার এসব বুঝে ওঠার আগেই আসল কাজ সেরে ফেলেন ওই প্রতারক। সমগ্র পরিকল্পনা ছিল এক অভিনব প্রতারণার ফাঁদ। আসলে সেই বালা ছিল ব্রোঞ্জের, যা দেখতে সোনার মতো। দোকানদার পরে জানান, “ওই সময় দোকানে আরেকজন গ্রাহক ছিলেন, তাই লোকটিকে খুব একটা খেয়াল করতে পারিনি। বুঝে ওঠার আগেই সে দুটি হার নিয়ে চলে যায়।”
এরপর বেশ খানিকটা সময় কেটে গেলেও যখন ওই ব্যক্তি দোকানে ফেরেননি, তখন সন্দেহ হয় কৃষ্ণ গোপাল বাবুর। বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, যেই মুদিখানার দোকানের কথা সে বলেছিল, তা আদৌ অস্তিত্বই নেই। তখনই বোঝা যায় পুরো ঘটনাটি সুপরিকল্পিত প্রতারণা। পরবর্তীতে দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে প্রতারক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেন কৃষ্ণবাবু। এরপর তিনি শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এবং সোনা-রুপোর অলংকার ব্যবসায়ী সংগঠনকেও ঘটনার কথা জানান। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে শান্তিপুর থানার পুলিশ।