#বর্ধমান: বৃহস্পতিবার সূর্যগ্রহণের সময় পুজো বন্ধ থাকবে বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে। এই সময় দেবীকে কোনও ভোগ বা পুজো নিবেদন করা যাবে না। গ্রহণের জন্য ভোগ রান্নাও বন্ধ থাকবে। সূর্যগ্রহণের শুরু থেকে গ্রহণ না ছাড়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে পূজার্চ্চনা। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অন্যান্য দিনের মতো মন্দির খোলা থাকলেও গ্রহণের সময় কোনও পূজাপাঠ হবে না।
advertisement
বর্ধমানে অধিষ্ঠাত্রী মা সর্বমঙ্গলাকে রাঢ়বঙ্গের দেবী বলা হয়। দেবীর কষ্টিপাথরের অষ্টাদশভূজা মূর্তি হাজার বছরেরও বেশি পুরনো। চরনতলে মহিষ, তার কাছেই অসুর। সিংহাসনে মা অধিষ্ঠিতা। ত্রিশূল দিয়ে অসুরের বক্ষ বিদীর্ন করছেন। রাঢ় বঙ্গের বাসিন্দারা যেকোনও মঙ্গল কাজ শুরু করেন এই মন্দিরে পুজো দিয়ে। শত শত বছর ধরে এই রীতি চলে আসছে। ষষ্ঠ শতকের কুব্জিকাতন্ত্রে বর্ধমান সর্বমঙ্গলা পীঠের উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া মানিক দত্তের আদি চন্ডীমঙ্গল, রামানন্দযতির চন্ডীমঙ্গল, মানিক গাঙ্গুলির ধর্মমঙ্গল, ভারতচন্দ্রের বিদ্যাসুন্দর, রূপরাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গলেও সর্বমঙ্গলা দেবীর কথা বলা হয়েছে। ইনি অসুরনাশিনী, দুর্গতিহারিনী, মঙ্গল ও আরোগ্যের অধিষ্ঠাত্রী দেবী।
অন্যান্য দিন ভোর পাঁচটায় পবিত্র গঙ্গাজলে মায়ের মুখ হাত পা ধুইয়ে সুগন্ধি তেল, শ্বেত এবং রক্ত চন্দনে চর্চিত করে মাকে সরবত গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। এরপর মাকে রাজবেশ অর্থাৎ মূল্যবান শাড়ি এবং অলঙ্কারে সাজিয়ে সিংহাসনে বসানো হয়। শুরু হয় মায়ের পুজো ও মঙ্গল আরতি। এই সময় দেওয়া হয় ফল, মন্ডা বাতাসার নৈবেদ্য। এরপর আবার আরতি হয়। পরে ভক্তজনের পুজো দেওয়া শুরু হয়। চলে একটা পর্যন্ত।
মন্দিরের পুরোহিত অরুণকুমার ভট্টাচার্য্য জানান, সকাল ৭.৫৯ মিনিট থেকে বেলা সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত কলকাতায় গ্রহণ চলবে। ওই সময় মন্দিরে মায়ের পুজো বন্ধ থাকবে। এমনিতেই বেলা একটায় মধ্যাহ্ন ভোগের পর মা শয়নে যান। সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত পুজো ও ভোগ রান্না বন্ধ থাকবে। সাড়ে ১১টা-র পর এদিন শুধু মায়ের ভোগ রান্না হবে। এদিন ভক্তদের ভোগ পরিবেশন বন্ধ থাকবে।