দশ দিন আগেই দেশের মাটিতে পা রেখেছিলেন পূর্ণম। কিন্তু একাধিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলায় তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি পাঠানো হয়নি। অবশেষে এক মাসের টানাপোড়েনের পর ফিরছেন তিনি।
স্বামী টয়লেটে গেলে স্ত্রী হাতে পেলেন মোবাইল ফোন, ‘আনলকড’…! তার পর যা দেখলেন, পরিণতি হল মারাত্মক!
গোল, ছোট, নাকি টানা টানা? চোখ দেখেই বুঝবেন কে, কেমন মানুষ…! মিলিয়ে নিন বৈশিষ্ট্যগুলো
advertisement
ঘটনার সূত্রপাত ২২ এপ্রিল। কাশ্মীরের পহেলগাঁও বৈসরন ভ্যালিতে জঙ্গিদের হামলায় নিহত হন ২৬ জন পর্যটক। পরদিনই পাঞ্জাবের ফিরোজপুরে ভারত-পাক সীমান্তে ডিউটির সময়ে অসাবধানতাবশত পাক ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েন বিএসএফ-এর ২৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কনস্টেবল পূর্ণম সাউ। গাছের তলায় বিশ্রাম নেওয়ার সময় পাক রেঞ্জার্সের হাতে ধরা পড়েন তিনি।
এরপর শুরু হয় কূটনৈতিক স্তরে তৎপরতা। ভারতের বিএসএফ এবং পাকিস্তান রেঞ্জার্সের মধ্যে একাধিক ফ্ল্যাগ মিটিং হয়। পূর্ণমকে মুক্ত করার বিষয়ে উদ্যোগ নেয় ভারত। বিএসএফের তরফে তাঁর পরিবারকে আশ্বস্ত করা হয়—যে কোনও মূল্যে পূর্ণমকে ফেরানো হবে। এই সময়েই পূর্ণমের স্ত্রী রজনী সাউ এবং পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্য পৌঁছে যান পাঠানকোটে।
বোর্ডের পরীক্ষায় ৬০% নম্বর পেল ছেলে! CBSE ‘রেজাল্ট’ বেরোতেই যা করলেন বাবা…দেখলে হতবাক হবেন!
ঠিক এই সময়েই জঙ্গি হামলার বদলা নিতে *অপারেশন সিঁদুর* শুরু করে ভারত। পাকিস্তানের ভূখণ্ডে থাকা নটি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় বায়ুসেনা। পাল্টা প্রত্যাঘাতের চেষ্টা করলেও পাকিস্তান ব্যর্থ হয়। সংঘর্ষের আবহে উৎকণ্ঠা বাড়ে পূর্ণমের পরিবারে।
এই সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার ফোনে কথা বলেন পূর্ণমের স্ত্রীর সঙ্গে। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিএসএফ ডিজির সঙ্গেও যোগাযোগ করেন।
পরে ভারত-পাকিস্তান দুই দেশের DGMO-দের মধ্যে হটলাইন বৈঠক হয় এবং ঘোষণা হয় সংঘর্ষবিরতির। এরপর নতুন করে আশার আলো দেখতে শুরু করে পূর্ণমের পরিবার।
গত ১৪ মে পাক রেঞ্জার্স পূর্ণমকে মুক্তি দেয়। আটারি ওয়াগা বর্ডার দিয়ে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। সেদিন সন্ধ্যায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পূর্ণমের রিষড়া বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন।
পূর্ণমের স্ত্রী বলেন, “খুব ভাল লাগছে, অবশেষে ও বাড়ি ফিরছে। তবে ওর কাছে ফোন ছিল না, তাই ঠিক কবে ফিরছে তা জানা যায়নি। দশ দিন আগে জানতাম ও ভারতে ফিরেছে। আজ ও আসবে শুনে দারুণ লাগছে। ওর পছন্দমতো সব কিছু রেঁধে রাখা হবে। আজকে ভেজ রান্না হচ্ছে ওট মিষ্টি দই খুব পছন্দের তাই সেটাও থাকছে।”
এক মাসের অনিশ্চয়তা, দুশ্চিন্তা, আতঙ্ক এবং অপেক্ষার শেষে রিষড়ায় এখন শুধুই উৎসবের প্রস্তুতি। আজকের দিনটা পরিবারের কাছে শুধু আনন্দ নয়—এ এক ইতিহাস।
রাণা কর্মকার