১৮৫১ সালে মহিষাদলের রাজা লছমন প্রসাদ গর্গের হাত ধরে এবং দেওয়ান রাম নারায়ণ গিরির উদ্যোগে মহিষাদলে হিজলী টাইডাল ক্যানেলের উপর চলাচলের জন্য পাকাপোক্ত সেতু গড়ে তোলা হয়। বর্তমানে সেই সেতু দিয়ে হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত। এই সেতুর একদিকে রয়েছে মহিষাদল রাজ হাইস্কুল, অপরদিকে রয়েছে মহিষাদল রাজ কলেজ এবং রাজ ইংলিশ স্কুল। এই রাজ ইংলিশ স্কুলেই সর্বাধিনায়ক সতীশ চন্দ্র সামন্ত পড়েছেন। সেই সেতু দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুনঃ পুজোর আগে নারীশক্তির জয়জয়কার! শাড়ি পরে বৈঠা হাতে মহিলারা, সোনাই নদীতে নৌকা বাইচে উপচে পড়ল ভিড়
হরেক রকম বিজ্ঞাপনের পোস্টার, পান ও গুটখার পিকে ভরে উঠেছিল সেতুর দেওয়াল। সেসব দেখে স্থানীয় কচিকাঁচারা নিজেরাই সেতুর দেওয়ালে চিত্রাঙ্কনের উদ্যোগ নেন। তাঁদের এই ধরণের চিন্তাভাবনার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বিশ্ব কলাকেন্দ্র এবং স্থানীয় ক্লাবের সদস্যরা। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ১০-১৫ জন কচিকাঁচা রঙ তুলির টানে সেতুর দেওয়ালজুড়ে ফুটিয়ে তুলছেন বিভিন্ন ধরণের মন জুড়নো ছবি।
বর্ণিতা, প্রতিভা, চন্দ্রিক, তিশা, সৈকত, শুভ্রাদের কাছে বর্তমানে মূল চ্যালেঞ্জ, পুজোর আগে গোটা সেতুর দেওয়ালে বিভিন্ন ধরণের ছবি এঁকে মানুষের সামনে তুলে ধরা। তাই রোজ স্কুলে যাওয়ার আগে এবং স্কুল ছুটির পরে স্কুলের পোশাক পরেই ব্রিজের উপর রঙ তুলির টান দিচ্ছেন তাঁরা। একপ্রকার নাওয়াখাওয়া ভুলে এহেন সামাজিক কাজে মেতে উঠেছে একদল পড়ুয়া।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বিশ্ব কলা কেন্দ্রের বিশ্বনাথ গোস্বামী বলেন, ‘আমরা সবাইকে অনুরোধ করব যাতে ব্রিজটিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা যায়। এই কচিকাঁচাদের দেখে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আরও উদ্বুদ্ধ হবে’। আঞ্চলিক ইতিহাসবিদদের কথায় জানা যায়, ১৮৯৭ সালের ২১ অক্টোবর এই সেতুর নীচ দিয়ে নৌকায় করে ওড়িশা যাত্রা করেছিলেন স্বয়ং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯৪৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর এই সেতুর নীচ দিয়েই ছোট স্টিমার করে মহিষাদল এসেছিলেন জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী। সেই ঐতিহাসিক সেতুতে খুদেদের এরূপ কাজে বাহবা জানাচ্ছেন অনেকেই। দৃশ্যদূষণের হাত থেকে সমাজকে রক্ষা করতে খুদেদের এই প্রয়াসের প্রশংসা করছেন সাধারণ মানুষ থেকে প্রশাসনিক আধিকারিকেরা।