রাজ্য প্রশাসনের নির্দেশে পাকুড় থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা মুর্শিদাবাদ জেলার সুতি-১, সুতি-২ , সামশেরগঞ্জ এবং ফরাক্কা ব্লকের বেশ কয়েকটি জায়গায় বিশেষ নজরদারি শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্রের তরফ থেকে ঝাড়খণ্ড থেকে মুর্শিদাবাদ জেলায় মুরগি পরিবহণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, জেলার বিভিন্ন ব্লকের একাধিক পোলট্রি থেকে পাখিদের নমুনা সংগ্রহ করা হলেও এখনও পর্যন্ত কোথাও বার্ড ফ্লু ধরা পড়েনি।
advertisement
সাধারণ মানুষকে অযথা আতঙ্কিত না হতে প্রশাসনের তরফ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। তবে প্রশাসন অনুরোধ করলেও পার্শ্ববর্তী রাজ্যে বার্ড ফ্লু-র খবর সুনিশ্চিত হওয়ার পর থেকে মুর্শিদাবাদ জেলাজুড়ে দেশি এবং পোলট্রি মুরগির দাম অস্বাভাবিক হারে কমতে শুরু করেছে। ফরাক্কা ব্যারেজ প্রকল্প এলাকার মুরগি ব্যবসায়ী দীপঙ্কর মণ্ডল জানান, ‘পাকুড় এলাকায় বার্ড ফ্লু-র খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকে গত কয়েকদিন ধরে গোটা মুরগির দাম বাজারে কমতে শুরু করেছে। ফরাক্কা বাজারে গত পরশু গোটা মুরগি ১০০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি হয়েছে। আজ আরও দশ টাকা দাম কমেছে।’
ফরাক্কার বিএমওএইচ মশিউর রহমান বলেন, ‘এই ব্লকের অন্তর্গত মহাদেবনগর এবং মামরেজপুর এলাকায় বহু বাড়ি এবং কিছু পোলট্রি ফার্ম থেকে অস্বাভাবিক সংখ্যায় মুরগি মৃত্যুর খবর আমরা পেয়েছি। ইতিমধ্যেই জেলায় বার্ড ফ্লু সংক্রান্ত একটি সতর্কতাও জারি করা হয়েছে।’ তিনি জানান, ‘আমরা খবর পেয়েছি বহু জায়গায় মরা মুরগি কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে আমরা সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করছি এবং কম দামে মরা মুরগি পেলে তা খেতে বারণ করছি।’
ফরাক্কার বিডিও জুনায়েদ আহমেদ বলেন, ‘জেলাশাসকের নির্দেশ পাওয়ার পর ফরাক্কা ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি কোনও জায়গায় অস্বাভাবিক সংখ্যায় মুরগি মারা যাচ্ছে কিনা তা চিহ্নিত করার জন্য প্রাণিসম্পদ দফতরের কর্মীরা ‘সার্ভেলেন্স’ শুরু করেছেন।’ তিনি জানান,’ ফরাক্কা ব্লকের অন্তর্গত খোশালপুর ,বেওয়া এবং কেদারনাথ ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় পুলিশের তরফ থেকে ‘নাকা পয়েন্ট’ তৈরি করা হয়েছে। ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে মুরগি নিয়ে কোনও গাড়ি এলে তাদেরকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি ‘প্রাণী মিত্র’দেরকে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। পোলট্রি ফার্ম এবং যেখানে মুরগি পালন করা হয় সেখানে রাসায়নিক স্প্রে করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে মরা মুরগির সংস্পর্শে না আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।’
কৌশিক অধিকারী