বুধবার সকালে বাবার সাথে বসেই মাধ্যমিক পর্ষদের তরফে ফলাফল ঘোষণা টিভিতে লাইভ দেখছিল অয়ন। হঠাৎ অষ্টম স্থানে নিজের নাম ঘোষণা শুনেও যেন বিশ্বাস করতে পারছিল না অয়ন। আনন্দে বাবাকেই প্রথম জড়িয়ে ধরেছিল সে। প্রথম মিষ্টিমুখ বাবার হাতেই। প্রত্যেকের জীবনেই বাবা একজন শিক্ষকের মতোই যেমন এগিয়ে চলার রাস্তা দেখান। অয়নের জীবনে অজয়বাবুও শিক্ষকের মতো বেড়ে চলার রাস্তা দেখিয়েছেন, তেমনই শিক্ষকতাও করেছেন তিনি।
advertisement
দমদম বৈদ্যনাথ ইনস্টিটিউশনের ছাত্র অয়ন ৬৮৫ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মধ্যে অষ্টম স্থান দখল করেছে। বিরাটি সুকুর আলি মোড় সংলগ্ন মানিকপুর মানশভূমিতে বাড়ি অজয়ের। বাবা পেশায় প্রাইভেট শিক্ষক। তিনিই অয়নের শিক্ষক। ছেলেকে তাঁর মতো করে যত্ন নিয়ে কেউ পড়াতে পারবে না বলেই নিজে বাড়িতেই পড়ান। কোনও দিনই অন্য শিক্ষকের হাতে তুলে দেননি। কিন্তু আর পাঁচজন বাবার মতো ছেলের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিতও নন অজয়বাবু। কিন্তু কেন?
অজয়বাবুর উত্তর, "আমি ছেলেকে বলি যেখানে দাঁড়িয়ে আছিস তার থেকে একধাপ আগেরটা ভাবতে, তার বেশি ভাবতে দিই না। এতে যেখানে আছে সেই ভীতটা মজবুত হয়। এখন থেকেই যদি ভাবি ডাক্তার হবে না ইঞ্জিনিয়র, তাহলে ছেলের উপর বোঝা চেপে যাবে। আরও বড় হোক তারপর ন্যাক বুঝে সেদিকে এগিয়ে দেব।"
বাড়িতে বাবার কাছে পরে অষ্টম হলেও অয়ন কখনই বইতে মুখ গুজে থাকেনি। পড়ার ফাঁকে একটু মন হালকা করার জন্য ছবি আঁকা, গল্পের বই পড়া এবং ক্রিকেট খেলা তো আছেই। কিশোর কুমারের ফ্যান অয়ন নিজেকে হালকা রাখতে বাড়িতে সাউন্ড বক্সে গান শুনত।
বাবার কাছে পড়ে মাধ্যমিকে অষ্টম স্থান দখল করা ও এর পরবর্তী লক্ষ্য উচ্চমাধ্যমিকে আরও ভাল ফল করা। তার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে সে। তার কথায়, ''ডাক্তার হব না ইঞ্জিনিয়ার তা ভবিষ্যৎ বলবে। যেটাই করি তার মাধ্যমে যেন দেশের সেবা করতে পারি। এটাই একমাত্র ইচ্ছে।''
SUJOY PAL