সতীদাহ প্রথা রদ করতে রাজা রামমোহন রায়কে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। ঊনবিংশ শতাব্দীকে বলা হয় নব জাগরণের সময়। সেই সময় পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় সতীদাহের মতো ভয়ঙ্কর প্রথা ছিল। একইভাবে ছিল বাল্যবিবাহের প্রচলন। তবে সতীদাহ বন্ধ হলেও বাল্য বিবাহের অভিশাপ এখনও থেকে গিয়েছে। যা নিয়ে অনেক চর্চা, আলোচনা শোনা যায়। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজা রামমোহন রায় সেই সময় সমাজ সংস্কার করেছিলেন। বাল্যবিবাহ রোধ ও সতীদাহ প্রথা বন্ধ করে নবজাগরণ ঘটিয়েছিলেন।
advertisement
আরও পড়ুনঃ পুজো মণ্ডপে কুমিরডাঙা থেকে কিতকিত! আবারও ছেলেবেলা ফিরে পেতে চান? টুক করে ঘুরে আসুন ‘এই’ প্যান্ডেল
মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের সৈদাবাদ কুহেলি সংঘ সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির এই বছরের পুজোর থিম ‘সমাজ সংস্কারের কাণ্ডারি’। কীভাবে সমাজ সংস্কারে দুই মনীষী কাজ করেছিলেন সেটা এই পুজো মণ্ডপে তুলে ধরা হয়েছে। চলতি বছর এই পুজো ৫১ তম বর্ষে পদার্পণ করল।
মুর্শিদাবাদ জেলায় বাল্যবিবাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। এখনও তা থেকে পুরোপুরি নিস্তার মেলেনি। মণ্ডপে তুলে ধরা হয়েছে সমাজের এই সব অভিশাপের ঘটনা। কোথাও নাবালিকা পাত্রীর ছবি দিয়ে বলা হয়েছে ‘স্টপ’। সেখানে বাংলায় লেখা হয়েছে, ১৯২৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর প্রথম ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিল দ্বারা সারদা আইন বাল্য বিবাহ নিরোধক আইন পাশ হয়। ২০০৬ সালের বাল্য বিবাহ সংশোধনী আইনে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর করার কথা। একইভাবে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, রামমোহন, বিদ্যাসাগরের জন্মবৃত্তান্ত। গুরত্বপূর্ণ ঘটনাবলীও এখানে তুলে ধরা হয়েছে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
পুজো কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, পুজো মণ্ডপে ঢুকলেই সমাজ সংস্কারের পাঠ চোখে পড়ছে। মণ্ডপে রামমোহনের ছবি দিয়ে লেখা রয়েছে, ১৭৭২ সালের ২২ মে হুগলি জেলার রাধানগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ”সকল মায়ের সন্তান তুমি, সকল বোনের ভাই। নতুন ভারতের রূপকার হে কুর্নিশ তোমায়। রাজা রামমোহন রায়”। কোথাও আবার বিদ্যাসাগরের ছবি দিয়ে লেখা, ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। ”ভর্তি ছিল অন্ধ বিশ্বাস, চলত বাল্য বিয়ে, দেখিয়ে দিলে ভুল যে তাঁদের চোখে আঙুল দিয়ে”। মণ্ডপের কোথাও আবার দেখা যাচ্ছে, শিক্ষিকা ছাত্রীদের পড়াচ্ছেন। লেখা রয়েছে অ, আ, ই, ঈ। সব মিলিয়ে, দর্শকদের বেশ আকর্ষণ করছে এই পুজো।