হুগলী নদীর সৌন্দর্য আর কেল্লার ঐতিহাসিক গুরুত্বের টানেই ডায়মন্ডহারবারের কেল্লার মাঠ হয়ে উঠেছিল জেলার অন্যতম পিকনিক স্পট। কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা আসতেন চিংড়ি খালি কেল্লার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। তবে দীর্ঘদিন সংরক্ষণের অভাবে বর্তমানে কেল্লার প্রতিটি অংশই কার্যত নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে, কমেছে পর্যটকদের আনাগোনা।
আরও পড়ুন: ৭০০ বছরের পুরনো ইতিহাস শেষের পথে
advertisement
অথচ আজও ডায়মন্ডহারবারে ঘুরতে আসার মূল আকর্ষণই হল পুরাতন কেল্লা। চিংড়ি খালি কেল্লা সংলগ্ন হুগলি নদীর মনমুগ্ধকর সৌন্দর্য্য তো আছেই, সঙ্গে আছে নৌকা বিহারের আনন্দ এবং জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য। যা আনন্দ দেয় পর্যটকদের।
এছাড়া ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ ও খেজুর গাছের সারির মাঝে হঠাৎ করেই নিজেকে আবিষ্কার করে বিস্মিতও হয়ে যেতে পারেন সবুজপ্রেমী মানুষেরা। তবে একসময় যে কেল্লার সৌন্দর্যের টানে দূর দূরান্ত থেকে ভ্রমন পিপাসু মানুষদের আনাগোনা শুরু হয়েছিল ডায়মন্ডহারবার শহরে, সে কেল্লার ছিটে ফোঁটাটুকুও আর অবশিষ্ট নেই। যা রয়েছে তা কেবল ছড়িয়ে থাকা, নোনা ধরা ইঁটৈর কয়েকটি স্তূপ।
দীর্ঘদিন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই, বিলিন হতে বসেছে দেড়শো বছরেরও বেশি পুরনো এই কেল্লা। ফলে ঘুরতে আসা পর্যটকরা কার্যত নিরাশ হয়েই বাড়ি ফিরছেন। ঘুরতে ভালোবাসা মানুষের সংখ্যা ধারাবাহিক ভাবে কমতে থাকায় প্রভাব পড়ছে শহরের পর্যটন শিল্পেও। বিধ্বস্ত হচ্ছেন আঞ্চলিক ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে স্থানীয় হোটেল মালিকরা। তবে এই বিষয়ে ডায়মন্ডহারবার পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, কেল্লা সংলগ্ন বেশ অনেকটা জায়গা সেনাবাহিনীর অধীনস্থ। ফলে এখানে কোনও প্রকার সংরক্ষণমূলক কাজ করার জন্য কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অনুমতির প্রয়োজন।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
তৎকালীন সময়ে কেল্লায় ছিল লাইটহাউস, জোড়া কামান। ২০০৩ সালে কেল্লার অবশিষ্টাংশের সংস্কার ও সংরক্ষণের জন্য কেন্দ্রকে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আজও তার অনুমতি না পাওয়ায় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কোনরুপ পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে কেল্লার মাঠটির পরিচর্যার দিকে বিশেষভাবে নজর দিয়েছে ডায়মন্ডহারবার পুরসভা। গড়ে তোলা হয়েছে শিশুদের খেলার স্থান, অতিথি ভবন। সব মিলিয়ে বছরভর যে পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকত ডায়মন্ডহারবার শহরের কেল্লার মাঠে, বর্তমানে তার কিছুটা অংশেরই দেখা মেলে শীতের মরসুমটুকুতে। তাও ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে একেবারেই নয়। নিতান্তই পিকনিক স্পট হিসাবে। ফলে এই স্থানটিকে সংরক্ষণ করার দাবি উঠেছে আরও জোরালোভাবে।
নবাব মল্লিক