আরও পড়ুন: রাজ্যে কাজ না পেয়ে মহারাষ্ট্রে পাড়ি, দেওয়াল চাপা পড়ে আবারও পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু
কোচবিহারের রসিকবিল প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রে রয়েছে বন দফতরের নার্সারি। সেখানে বছর দেড়েকের মধ্যে শতাধিক ঘড়িয়াল শাবকের জন্ম হয়েছে। সেখানে ছোট পরিসরে এত শাবকের থাকায় বড় হয়ে ওঠার সুযোগ হচ্ছিল না। সেই কারণেই বন দফতরের নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ ডিভিশনের উদ্যোগে কোচবিহার থেকে নিয়ে এসে জলঙ্গির পদ্মায় ৩৭টি ঘড়িয়াল শাবক ছাড়া হয়। এদিকে বন বিভাগের এমন সিদ্ধান্তে আতঙ্কে মৎস্যজীবীরা। তাঁদের আশঙ্কা, নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে এবার ঘড়িয়ালের দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন।
advertisement
ঘড়িয়াল হল মূলত গোত্রভুক্ত নামের এক প্রাচীনকালীন সরীসৃপ। এটি মেছো কুমির, ঘট কুমির নামেও পরিচিত। প্রধান খাদ্য মাছ বলেই হয়ত মেছো-কুমির নাম। কারও কারও মতে, মাথা ও তুন্ড দেখতে অনেকটা ঘোড়ার মাথা ও মুখের মতো বলেই এদের নাম ঘড়িয়াল। অন্যদের মতে, ঘোড়া থেকে নয়, ঘড়া থেকেই ঘড়িয়াল হয়েছে। ঘড়িয়ালের তুন্ডে কোমল হাড় দিয়ে তৈরি একটি অষ্টভুজ উদগত অংশ থাকে যা দেখতে ঘড়ার মতো। গঙ্গা নদীতে বহুদৃষ্ট বলেই বৈজ্ঞানিক নামের সঙ্গে ‘gangeticus’ শব্দটি যুক্ত। জলচর এই সরীসৃপটি লাজুক ও শান্ত প্রকৃতির হয়। ঘড়িয়ালের দেহের দৈর্ঘ্য হয় সর্বোচ্চ ৪-৭ মিটার। গঙ্গা নদী ছাড়াও উপমহাদেশের অন্যান্য বড় নদীতেও ঘড়িয়াল দেখা যায়। বাংলাদেশের পদ্মা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রে এবং সেগুলির শাখা-প্রশাখায় একসময় প্রচুর ঘড়িয়াল দেখা যেত।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
ঘড়িয়ালের দেহের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল লম্বা ও সরু তুন্ড। মুখে উপরের চোয়ালে ৫০টি ছোট কিন্তু খুব ধারালো দাঁত থাকে। নিচের চোয়ালে দাঁতের সংখ্যা ৪৮। ছোট ছোট মাছ ও জলজ পাখি শিকারে এ দাঁত খুব কার্যকর। ঘড়িয়াল নদীতটে বিচরণরত ছাগল, কুকুর ইত্যাদিও শিকার করে। প্রাকৃতিক পরিবেশে কতদিন বাঁচে তা সঠিকভাবে জানা যায় নি। বন্দি অবস্থায় ঘড়িয়াল প্রায় ৪০ বছর বাঁচলেও সম্ভবত এদের গড় আয়ু আরও বেশি।
কৌশিক অধিকারী