কেমন হবে যদি আলমারি জুড়ে পোশাকের বদলে থাকে বই আর বই? হয়তো অনেকের বেশ পছন্দ হবে আবার কারও ভাল লাগবে না। তবে এক বইপ্রেমীর গল্প আপনাকেও অবাক করে দেবে। যেখানেই যান কিনে আনেন বই, সে যত দামেরই হোক না কেন! নিজে পড়েন শুধু নয়, একটা রুমকে সাজিয়ে তুলেছেন আস্তও এক লাইব্রেরিতে। এই বৃদ্ধের নেশা এবং শখ অবাক করবে আপনাকে। গল্পের বই থেকে উপন্যাস, নাটক কিংবা ইতিহাসের বই সাজিয়ে তুলেছেন বাড়ির দেওয়াল আলমারিতে।
advertisement
আরও পড়ুন: একটি বিমান ১ ঘণ্টায় কত ‘লিটার’ জ্বালানি ‘পোড়ায়’ বলুন দেখি…? চমকে দেবে ‘হিসাব’!
পোশাক নয়, বাড়ির আলমারি জুড়ে সাজানো শুধু বই। গল্প, উপন্যাস, নাটক, ইতিহাসের নানা কথন-সহ একাধিক বই দেওয়াল আলমারি জুড়ে। এটা কোনও লাইব্রেরির অংশ নয়, এক ব্যক্তির জমানো আস্ত বই এর ভাণ্ডার। ছোট থেকেই শখ থাকায় এক এক করে জমিয়েছেন বই। থাকেন প্রত্যন্ত এক গ্রামীণ এলাকায়। তবে নিতান্তই শখের বসে তার এই আজব কীর্তি।
আরও পড়ুন: চকচকে হয়ে যাবে মুখ…! গরমে ঘুমানোর আগে এই ‘জিনিস’ দিয়ে করুন ‘কাজ’, ১ রাতেই দেখুন তফাৎ
আজ যখন বর্তমান যুবক-প্রজন্ম বই থেকে মুখ ফিরিয়েছে, তখনই এই বৃদ্ধ সকলের কাছে দৃষ্টান্ত। সকাল থেকে সন্ধ্যা তিনি ব্যস্ত থাকেন বইয়ের মধ্যে। চলে লেখালেখি। তবে বাংলা-ওড়িশা সীমান্ত এলাকা পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনের সোনাকোনিয়া এলাকার বাসিন্দা বিশিষ্ট শিক্ষাব্রতী অবন্তী কুমার জানার সবথেকে বেশি পছন্দ বই পড়া।
ছোট থেকেই নেশা বই কেনা, বই পড়া। সেই ধারণাকে মাথায় নিয়ে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর একাধিক বই কিনেছেন তিনি। মেদিনীপুরের ইতিহাসের নানা খণ্ড, বাংলা অভিধান, বিশ্বকোষ, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের নানা খণ্ড সবই রয়েছে তাঁর সংগ্রহে।
সঠিক হিসাব না থাকলেও এ পর্যন্ত অবন্তি বাবুর সংগ্রহে রয়েছে তিন হাজারেরও বেশি বই। অর্থাৎ বাড়িতেই যেন আস্ত লাইব্রেরি বানিয়েছেন তিনি। বাড়িতেই অবন্তি বাবু একটি নার্সারি স্কুল চালান। তাঁর সামান্য অর্থে কিনে ফেলেন পছন্দ মতো বই। ছোটখাটো চেহারার অবন্তি বাবু অবসর সময়ে নিজেও পড়তে থাকেন পাতার পর পাতা।
বাড়ির কাছেই হাই স্কুল। বিদ্যালয় শুরুর আগে কিংবা টিফিনের সময় তাঁর বাড়িতে আসেন বহু বইপ্রেমী ছাত্র-ছাত্রীরা। ঘেঁটে দেখেন অবন্তি বাবুর সংগ্রহে থাকা নানান বইয়ের পাতা। প্রসঙ্গত বর্তমান প্রজন্ম মুখ ফিরিয়েছে বই থেকে। ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে বই পড়ার প্রবণতা। ডিজিটাল যুগে ক্রমশ বই পড়ার অভ্যাস বদলাচ্ছে কচিকাঁচারা। তবে অবন্তি বাবুর ইচ্ছে, বর্তমান যুবক প্রজন্ম থেকে আবালবৃদ্ধবনিতা সবাই বই পড়ুক।
প্রতিদিন ছাত্র-ছাত্রীর পাশাপাশি বই পড়তে আসেন ইতিহাস গবেষক থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা।শিক্ষা বাঁচানোর তার এই মহৎ উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ
রঞ্জন চন্দ