কুড়মি সম্প্রদায়ের সমস্ত সংস্কৃতি ও লোক উৎসব প্রকৃতি কেন্দ্রীক এবং কৃষি ভিত্তিক। প্রাচীন বিশ্বাস মতে জ্যৈষ্ঠ মাসের ১৩ তারিখ থেকে সূর্য ও রোহিনী নক্ষত্রের তেজ যুগ্মভাবে পৃথিবীর উপর পড়ে। রোহিনি পর্বের প্রথম দিন থেকে সন্ধ্যায় নির্দিষ্ট নির্ঘণ্ট দেখে মহিলারা জমি থেকে মাটি নিয়ে আসেন। সেই মাটি বাড়িতে রেখে চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী পুজো হয়। আবার এই দিনই নতুন বছরের কৃষিকাজ শুরু হয় ধানের বীজ রোপনের মাধ্যমে। সাধারণত বাড়ির বড় সদস্যরা এই কাজ করে থাকেন। আর রোহিনির শুরু থেকে পরবর্তী সাত দিন কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন শাক খাননি।
advertisement
আরও পড়ুন: পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে রঙিন ঝাড়গ্রাম ! বদলে যাচ্ছে চেহারা
কুড়মি সম্প্রদায়ের মধ্যে পরিচালিত বিশ্বাস অনুযায়ী এই সময় শাক না খেলে জমিতে আগাছা বা ঘাস হয় না। এছাড়াও এই পরব যে কেন্দ্র করে বিভিন্ন প্রবাদ এবং লোক কথা প্রচলিত রয়েছে। পরবের শুরুর দিন জঙ্গলমহলের মানুষজন আষাড়ী ফল নামে এক ধরনের বিশেষ ফল খেয়ে থাকেন। এই ফলটির প্রতিষেধক গুন আছে। তাই কৃষিকাজ শুরু করার পূর্বে বিভিন্ন বিষক্রিয়ার প্রতিশেধক হিসাবে এই ফল পূর্বপুরুষ ধরে খেয়ে আসছে। রহিন কথার অর্থ হল সবুজায়ন। রোহিনী পরবে মেতে ওঠেন কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
কৃষি ভিত্তিক এই পরবকে কেন্দ্র করে চলে গ্রামে গ্রামে নাচ গান। তবে এই পরবের মূল উদ্দেশ্য হল কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়ন, যার সূচনা হয় প্রতি বছর জৈষ্ঠ মাসের ১৩ তারিখ। কৃষি সভ্যতার সূচনা থেকে প্রতিবছর ১৩ জ্যৈষ্ঠ রোহিনী পরব পালন হয়ে আসছে। কুড়মি সম্প্রদায় এই সংস্কৃতির ধারক ও বাহক বলে আদিবাসী কর্মী সমাজের রাজ্য যুব সম্পাদক তুহিন মাহাত জানিয়েছেন।
তন্ময় নন্দী