বৃদ্ধা রোগাতুর মা আরতি রুইদাসকে নিয়ে কোনওরকমে বেঁচে রয়েছেন বাবু রুইদাস। প্রতিবছর বর্ষার সময় ছিটেবেড়ার ঘরের ভেতর এক হাঁটু করে জল ঢুকে থাকে। সেই সময় প্রতিবেশীদের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয় মা ও ছেলেকে। একাধিক রোগে আক্রান্ত বৃদ্ধা মাকে ছেড়ে অন্য কোনো কাজেও যেতে পারেনা ছেলে বাবু রুইদাস। পাড়ারই একটি দোকানে কর্মচারী হিসাবে কাজ করেন। কোনোদিন পান ৫০টাকা আবার কোনোদিন ৬০টাকা। আয় বলতে এটাই। তা দিয়েই কোনও দিন ফ্যান ভাত আবার কখনও সবজি ভাত জোটে তাঁদের। তাঁদের এই অসহায়তায় প্রতিবেশীরাও মাঝে মাঝেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন, কিন্তু তারাই বা কতদিন সেটা করতে পারেন। ফলে সকলেই চাইছেন সরকার এতরকম সুবিধা দিচ্ছে, নেতা - মন্ত্রীরা এত বড় বড় ভাষণ দিচ্ছেন – কিন্তু এঁদের পাশে কেউ নেই। নেই রাস্তা, বৈদ্যুতিক আলো। এখনও হ্যারিকেন জ্বালিয়েই রাত কাটাতে হয় এঁদের।
advertisement
আরতি রুইদাস জানিয়েছেন, প্রায় ১২ বছর ধরে তাঁরা এখানে বসবাস করছেন। একটু বৃষ্টি হলেই ঘরের মধ্যে জল ঢুকে পড়ে। তখন অন্যজনের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয় তাঁদের। আর্থিক কারণে ঘর মেরামত তো দূর অস্ত নিজের চিকিৎসাও করাতে পারেননি। হাঁটাচলায় প্রায় অক্ষম বৃদ্ধা এখন চাইছেন তাঁর ছেলের একটা ব্যবস্থা হোক, আর তাঁর মাথা গোঁজার ঠাঁইটা ঠিক হোক।
বাবু রুইদাস জানিয়েছেন, অসুস্থ বৃদ্ধা মাকে ছেড়ে তিনি কোথাও যেতে পারেন না। তাঁকে পরিচর্যা করতে হয়। তারই মাঝে পাড়ার ছোট দোকানদার তারক বৈরাগীর দোকানে কাজ করেন তিনি গড়ে প্রতিদিন ৫০-৬০ টাকা পান। তাই দিয়েই চলে মা ছেলের সংসার।তাঁদের এই অসহায়তার কথা বারবার জানিয়েছেন। কিন্তু লাভ হয়নি।
প্রতিবেশীরা বললেন, এই পরিবারের কষ্ট চোখে দেখা যায় না। সরকার কিছু করুক এই পরিবারটির জন্য। চারিদিকে বড়বড় বাড়ি হয়ে যাওয়ায় ড্রেনেজ সিস্টেম ভেঙে পড়েছে। ফলে সমস্ত জল জমে তাদের ঘরে ঢুকে পড়ছে। কয়েকদিন আগেই ধার করে একটি চৌকি কিনে এনেছেন। এখন তার ওপরেই রান্নাবান্না, খাওয়া দাওয়া সবই চলছে। মাঝে মাঝেই ঘরে ঢুকছে সাপ।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সরকার গরীব মানুষদের জন্য বাংলা আবাস যোজনা সহ একাধিক প্রকল্প চালু করেছেন কিন্তু যাঁদের দরকার তাঁরা তা পাচ্ছেন না - যার জ্বলন্ত উদাহরণ আরতি রুইদাসের পরিবার। পরিবারকে সব রকমের সাহায্যের আশ্বাস বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাসের।
Saradindu Ghosh