সমীক্ষা করতে যাওয়া আশা কর্মীরা এ ব্যাপারে তাঁকে প্রশ্ন করলে তিনি তাদের উপর চড়াও হন বলে অভিযোগ। তালিকার নাম রেখে দিতে আশা কর্মীদের তিনি বাধ্য করেন বলেও অভিযোগ। যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েতের ওই মহিলা সদস্য। তাঁর দাবি, কাঁচা বাড়ি থাকাকালীন তিনি তালিকায় নাম তুলেছিলেন। কিন্তু একসঙ্গে পরিবারের সাত সদস্যের নাম কীভাবে এল, তার স্পষ্ট উত্তর তিনি দিতে পারেননি।
advertisement
আশা কর্মীদের সমীক্ষার পরও তালিকায় কীভাবে তাদের নাম থেকে গেল তা নিয়ে প্রশাসনিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাওয়ার পর ওই সদস্যা পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে নাম বাতিলের তদবির শুরু করেছেন বলে জানা গিয়েছে। যদিও তিনি ক্যামেরার সামনে এব্যাপারে মুখ খুলতে চাননি।
আরও পড়ুন- ওটিটি থ্রিলারের ভিড়ে ভালবাসার উষ্ণ পরশ, সমদর্শী দত্তর পরিচালনায় আসছে ‘ইতি Memories’
ঝাঁ চকচকে পাকাবাড়ি। তাও তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যার নাম রয়েছে আবাস যোজনার তালিকায়। তাঁর পরিবারের আরও ৬ জনের নাম আছে সরকারি তালিকায়। সমীক্ষায় ওই নাম যাতে আশাকর্মীরা বাদ না দেন তার জন্য চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ উঠেছে বর্ধমান-১ ব্লকের রায়ান-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা ফতেমা বিবি শেখের বিরুদ্ধে। এমনকি এলাকার সমীক্ষার কাজে আসা আশাকর্মীদের সঙ্গে নিজেও ঘোরেন, যাতে পরিবারের কারও বা পছন্দের কারও নাম যাতে তালিকা থেকে বাদ না যায়। যদিও ওই পঞ্চায়েত সদস্যা আশাকর্মীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। একইসঙ্গে জানিয়েছেন, আবাস যোজনার তালিকা থেকে নাম বাদ দিতে পঞ্চায়েতে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
বর্ধমান শহরের অদূরে বিজয়রাম এলাকায় বাড়ি ফতেমা বিবির। রাস্তার ধারেই ঝাঁ চকচকে বাড়ি। তাঁর নাম রয়েছে আবাস যোজনার তালিকায়। এছাড়া ফতেমার মা মনোহারা শেখ, বোন রেহিমা খাতুন, দিদি আজিফা বিবি শেখ, আর এক বোন আলিমা বিবি, ভাইয়ের স্ত্রী চাঁদনি শেখ ও কাকা শেখ সাইরিনার নাম রয়েছে আবাস যোজনার তালিকায়। কয়েকদিন আগে আশাকর্মীরা সমীক্ষায় এসেছিলেন। অভিযোগ, পঞ্চায়েত সদস্য নিজে ও তাঁর দুই নিকটাত্মীয় তাঁদের সঙ্গে ঘুরেছেন যাতে কোনওভাবেই ওই সাতটি নাম তালিকা থেকে বাদ না যায়। ভয়ে এবং চাপ সৃষ্টি করার ফলে ওই সাতজনের নাম রেখেই তালিকা জমা দিয়েছেন আশাকর্মীরা।
যদিও ফতেমা বলেছেন, "যখন তালিকা তৈরি হয়েছে তখন কারও পাকা বাড়ি ছিল না আমাদের। পরে পাকাবাড়ি হয়েছে। তালিকায় নাম রয়েছে জানতে পেরে পঞ্চায়েতে আবেদন করেছি নাম বাদ দেওয়ার জন্য।" আশাকর্মীরা সমীক্ষায় গেলে চাপ দিয়ে তালিকায় নাম রাখতে বাধ্য করার বিষয়ে প্রথমে নিরুত্তর থাকেন। পরে ভয় দেখানোর কথা অস্বীকার করেন ওই পঞ্চায়েত সদস্যা। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান আলমগীর শেখ জানান, ওই সদস্য নাম বাদ দিতে আবেদন করেছেন। তা তাঁরা ব্লকে পাঠিয়ে দেবেন। তবে আশাকর্মীরা যখন সার্ভে করতে গিয়েছিল তখনই সদস্য নাম বাদ দিলে বিষয়টায় আরও স্বচ্ছতা থাকতো। বর্ধমান-১ ব্লকের বিডিও অভিরূপ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, তালিকা স্বচ্ছ করার কাজ চলছে। প্রকৃত উপভোক্তাদের নামই তালিকায় থাকবে। বাকি সব বাদ দেওয়া হবে।