২০১১ মার্চ থেকে ২০২০ মার্চ পর্যন্ত শুধুমাত্র পূর্ব বর্ধমান জেলা বজ্রাঘাতে মারা গেছেন ৩৭৩ জন। ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত গোটা জেলায় বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয়েছে ১৪৩ জনের। প্রতিবছরই বজ্রাঘাতে লাফিয়ে লাফিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকায় একদিকে যেমন গোটা রাজ্য জুড়েই কঠোরভাবে সচেতনতা প্রচার শুরু হয়েছে, তেমনই পূর্ব বর্ধমান জেলায় বিশেষ করে বহুতল বাড়িগুলিতে বাধ্যতামূলকভাবে বজ্রবিদ্যুত নিরোধক ব্যবস্থা লাগানোর ওপর জোর দেওয়া হল।
advertisement
জুন মাসের প্রথম দিকেই পূর্ব বর্ধমান জেলায় কাটোয়া, কালনা এবং জামালপুরে পরপর বজ্রাঘাতে সবমিলিয়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বজ্রাঘাতে মৃতের পরিবারের হাতে সরকারিভাবে আর্থিকভাবে ক্ষতিপূরণও তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরেই উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, কেন এত বজ্রপাতের ঘটনা ঘটছে। ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে কেন এত বজ্রপাতের ঘটনা ঘটছে তা জানতে বিশেষজ্ঞ কমিটি পাঠানোর আবেদনও জানানো হচ্ছে। আর তারই পাশাপাশি এবার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার সমস্ত পুরসভা এবং পঞ্চায়েতগুলির কাছেও নয়া নির্দেশ পাঠানো হচ্ছে।
বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অনির্বাণ কোলে জানিয়েছেন, বর্ধমান শহর সহ পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতেও বর্তমানে বহুতল বাড়ি নির্মাণ হচ্ছে। কিন্তু কার্যতই কোনো বাড়িতেই থাকছে না বজ্রবিদ্যুত নিরোধক ব্যবস্থাপনা। কিন্তু যেভাবে বজ্রপাতের পরিমাণ বাড়ছে তাই বহুতল বাড়ি তার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা দিতেই বজ্রবিদ্যুত নিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণকে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, যখনই কোনো বহুতল নির্মিত হয় তখনই সেই বহুতলের অগ্নি নিরোধক ব্যবস্থার পাশাপাশি বজ্র নিরোধক ব্যবস্থাও গ্রহণ করার জন্য বলা হয়। এব্যাপারে সরকারি নির্দেশিকাও রয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা মানা হচ্ছে না। অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়েছেন, তাঁরা এব্যাপারে পুরসভা এবং পঞ্চায়েতগুলিকে নির্দেশ দিচ্ছেন যাতে বাধ্যতামূলকভাবে বজ্রবিদ্যুত নিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। একইসঙ্গে বজ্রাঘাতে মৃত্যুর ঘটনা বাড়তে থাকায় ইতিমধ্যেই গোটা জেলা জুড়ে ব্যাপক প্রচার শুরু করা হয়েছে। বাসিন্দাদের সচেতন করতে ছড়ানো হচ্ছে লিফলেট।