হাওড়া-কাটোয়া বা শিয়ালদহ-কাটোয়া রেলপথে পাটুলি ষ্টেশনে নেমে, পাটুলি স্টেশন থেকে ট্রেকার অথবা টোটোতে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই যাওয়া যাবে এই মন্দিরে। এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা হওয়ার পিছনে কিছু ইতিহাস রয়েছে। এই ইতিহাস জানার পরে আপনারও ইচ্ছে করবে এই মন্দির নিজে ঘুড়ে দেখার।
advertisement
মন্দিরের এক সেবাইত জানান, মন্দির কবে স্থাপিত হয়েছে তা বলা অসম্ভব। গ্রামে যদু ঘোষ নামে এক ব্যক্তির বেশ কিছু গরু ছিল । তারই মধ্যে একটি গরু তৎকালীন জঙ্গলে ঘেরা এই জায়গায় যেত। এরপর এক অলৌকিক ঘটনা যদু ঘোষ লক্ষ্য করেন, তখন তিনি এ কথা পুরোহিত মধুসূদন চট্টোপাধ্যায়কে জানান। পরবর্তীতে মধুসূদন চট্টোপাধ্যায় স্বপ্নাদেশ পান এবং দেখেন ওই জায়গায় রয়েছে শিবলিঙ্গ। তারপর থেকেই শুরু পূজার্চনা।
মন্দিরের সেবাইত কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, শুনেছি মন্দিরে তৈলঙ্গ স্বামী জপ করেছেন বসে। বহু পুরনো মন্দির, কত বছর আগে স্থাপিত হয়েছে এটা বলা অসম্ভব। অন্যান্য মন্দিরের থেকে এই মন্দিরের নিয়ম অনেক আলাদা। অন্যান্য মন্দিরের শিবের যেরকম নিয়ম থাকে তার থেকে এই মন্দিরের শিবের নিয়ম সম্পূর্ণভাবে আলাদা। এই মন্দিরের শিব স্বয়ম্ভু নিজে নিজে আবির্ভূত হয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ অক্টোবরেই অতি শুভ বিরল ভাদ্র রাজযোগ! বিপুল অর্থলাভ এই ৩ রাশির, নতুন সম্পত্তির মালিক হবেন
এই শিবের নিয়ম-কানুন অনেকে জানতে চায়, কারণ নিয়ম সম্পূর্ণরূপে আলাদা। গাজন হয় চৈত্র মাসে, কিন্তু এই শিবের গাজন হয় বৈশাখ মাসে বৌদ্ধ পূর্ণিমার সময়। প্রত্যেক শিবের যে গৌরীপট্ট থাকে সেটা হয় উত্তরমুখী, কিন্তু বাবা বুড়োরাজের গৌরীপট্ট পূর্বমুখী। অন্যান্য শিবের যে বেল পাতা দেওয়া হয় সেটা উল্টো করে কিন্তু এখানে এই শিবকে বেল পাতা দেওয়া হয় সোজা অবস্থায়। পূর্বপুরুষ থেকে চলে আসা এই নিয়ম এখনও পালিত হয়ে আসছে এই মন্দিরে।
মন্দিরে সবথেকে বেশি ভিড় হয় বৈশাখ মাসে বৌদ্ধ পূর্ণিমায় গাজনের সময়। ১৪-১৫ হাজার সন্ন্যাসীর সমাগম হয়। লক্ষাধিক ভক্তের আগমন হয় মন্দির প্রাঙ্গনে। বছরের প্রায় প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন মন্দিরে। রয়েছে ভোগ প্রসাদের ব্যবস্থা, তবে সেক্ষেত্রে মন্দির কর্তৃপক্ষকে আগে থেকে জানাতে হয়। আপনি যদি মন্দির প্রাঙ্গণে রাতে থাকতে চান তাহলে সেই ব্যবস্থাও রয়েছে। তবে রাতে থাকার জন্য লাগবে প্রয়োজনীয় নথি। ৮২৫০৪০৭২৯৬ এই নম্বরে ফোন করে আগে থেকে আপনাকে বুক করতে হবে।
Bonoarilal Chowdhury