এখন বর্ষার ভরা মরশুম। মাঝেমধ্যে আকাশ নীল হলেও ক্যালেন্ডার বলছে পুজো এখনও প্রায় তিন মাস বাকি। কিন্তু শিল্পীদের কাছে আর কয়েকটা দিন। কারণ বৈশাখ মাস থেকেই কাজ শুরু করে দেন তাঁরা। সেই জায়গায় এখনও তেমন বরাত না মেলায় সিদ্ধার্থের মতো হতাশ অনেকেই। পুজো হবে তো! কি হবে তার গাইড লাইন, করোনার থার্ড ফেজ দাপট দেখাবে না তো- দ্বিধায় উদ্যোক্তারাও। সে কারণেই আয়োজন শুরু করতে সময় নিচ্ছে অনেক পুজো কমিটি।
advertisement
গত বছর কিছু বরাত মিললেও এবছর বেশি বাজেটের মূর্তি গড়ার দিকে এগোচ্ছে না পুজো উদ্যোক্তারা। তাই ছাঁচের মূর্তির বাইরে থিম বা শিল্পীর তৈরি মূর্তির কোনও বরাত পাওয়া যাচ্ছে না। এই ধরণের মূর্তি তৈরিতে সময় বেশি লাগে। এছাড়া অনেক সময় বিদেশে পাড়ি দেয় মূর্তি। তাই অনেক আগে থেকেই অর্ডার আসা শুরু হয়। কিন্তু, এবছর পুজোর আর হাতেগোনা কয়েকটা দিন বাকি থাকলেও এখনও কোনও অর্ডার আসেনি। এরপর অর্ডার আসলেও বড় কাজ করা সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন শিল্পী।
২০০০ সাল থেকে গুরু হরিহর দেশাইয়ের হাত ধরে শুরু হয় পথ চলা। ২০০৭ সাল থেকে নিজেই মূর্তি তৈরির কাজ করে আসছেন তিনি। ২০০৯ সালে তাঁর তৈরি কলা গাছের ছালের মূর্তি কলকাতার একটি পুজো মন্ডপে গিয়েছিল। সে বছর সেরা মূর্তি হিসেবে স্বর্ন পদক পেয়েছিলেন তিনি। এরপর এশিয়ান পেন্টস শারদ সম্মান পেয়েছিলেন ২০১০ সালে। সে বছর তাঁতের সুতো ও জরির কাজের মূর্তি সেরার শিরোপা পায়। গত বছর তাঁর তৈরি লক্ষ্মী, সরস্বতী মূর্তি নরওয়ে পাড়ি দিয়েছিল। কিন্তু এবছর কোনও পুজো উদ্যোক্তার তরফে মূর্তি তৈরির ডাক আসেনি। গত নরওয়ের ওই সংস্থা দুর্গা মূর্তি তৈরির কথা জানালেও এখনও কোনও যোগাযোগ করেনি।
শিল্পী জানালেন, সাধারণ ছাঁচে গড়া মূর্তির থেকে অনেকটাই আলাদা তাঁদের কাজ। এই ধরনের কাজ এক্কেবারেই শিল্পীর মস্তিস্ক প্রসূত। এই সমস্ত কাজের জন্য কোনও নির্দিষ্ট ছাঁচ আগে থেকে তৈরি থাকে না। পুরোটাই অর্ডার পাওয়ার পর চাহিদা অনুযায়ী তৈরি করতে হয়। ফলে সময় অনেক বেশি লাগে। অন্যান্য বছর বৈশাখ মাস থেকেই কাজ শুরু করে দিতে হয়। প্রতি বছর ৭-৮টি মূর্তি তৈরির অর্ডার আসে। নরওয়ে একটি পুজোর জন্য ৫ ফুটে একটি দুর্গা প্রতিমা তৈরির ভাবনা চলছিল। তবে এখনও উদ্যোগক্তাদের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
