আজ সেই শিশু বন্ধুদের সঙ্গে দৌড়ে ছুটে খেলে বেড়াচ্ছে। সায়ক চট্টোপাধ্যায়ের বয়স ১৪ বছর। সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র (Kidney Transplantation) । বাবা দেবাশীষ চট্টোপাধ্যায় সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করেন।মা রিঙ্কু গৃহবধূ।পাঁচ বছর বয়সে সায়কের উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়ে (Bangla News)। তারপর বিভিন্ন ডাক্তার দেখানোর পর ২০১৪ সালে কলকাতার ডাক্তারদের দেখালে ডাক্তাররা বলেন,তার দুটো কিডনি অকেজো।
advertisement
ছেলেকে বাঁচানোর জন্য বর্ধমানের মন্তেশ্বর থেকে কলকাতায় এসে পড়ে থাকেন দেবাশীষ এবং রিঙ্কু। চিকিৎসার ব্যয় ভার বহন করতে গিয়ে পাঁচ বিঘা জমি,গয়না সমস্ত কিছু বিক্রি করতে বাধ্য হন ওঁরা।ছেলের একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করান। ছেলেকে বাঁচাতে আজ সর্বশান্ত।
অবশেষে দেবাশীষ ছেলেকে বাঁচাতে কলকাতায়(Bangla News) এসে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি নেয়।দক্ষিণ কলকাতার অজয়নগর এলাকাতে ভাড়া বাড়িতে ওঠেন। চলে চিকিৎসা। কারণ আর শুধু কিডনির অসুখ শুধু নয়। বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা যেতে থাকে ছেলের শরীরে। তবু যুদ্ধ থামেনি। ২০১৮ সাল থেকে আবার জ্বর ,ইত্যাদি অসুখ পুনরায় বাড়তে থাকে। জানা যায় শিশুটির লিভার অকেজো হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন : মাকে খুঁজছে ছোট্ট নীল! কেন ঘর ছাড়ল না দাস পরিবার, আক্ষেপ প্রতিবেশীদের
এরপর কলকাতায় বিভিন্ন ডাক্তারদের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর,চেন্নাই গিয়ে ডাক্তার নরেশ সানমুগামের চিকিৎসায় অনেকটা আশ্বস্থ হন অসহায় বাবা মা। ২০২০ সাল থেকে লিভার প্রতিস্থাপনের(Kidney Transplantation) জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। অবশেষে ২০২১ সালে ১৬ই এপ্রিল সায়কের লিভার প্রতিস্থাপন হয়। সায়ক এখন সম্পূর্ন সুস্থ।
সংবাদ মাধ্যমের সামনে অনর্গল কথা বলছিল ছোট্ট যুদ্ধজয়ী সায়ক। সে এখন অন্যান্য সাধারণ সুস্থ বন্ধুদের মতোই ফুটবল, ক্রিকেট খেলে। পড়াশুনো করে।বন্ধুদের সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা করে। মা রিঙ্কু বারে বারে বলছিলেন,ডাক্তার নরেশের জন্যই ছেলেকে ফিরে পেয়েছেন।জীবনের আশা ছেড়ে দেওয়া ছেলেকে আবার সুস্থ করে কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে চিকিৎসা বিজ্ঞান। তবে রিঙ্কু ও দেবাশীষের বক্তব্য,সবকিছু হারিয়ে কোনও দুঃখ নেই। ছেলেকে সুস্থ করতে পেরে তাদের খুশির চাঁদ হাসছে এক চিলতে ভাড়া ঘরে।