হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ‘ইঁদুরে চোখ উপড়ে নেওয়ার তত্ত্ব’ সামনে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা। ঘটনা আড়াল করতেই মৃতদেহের চোখে তুলসী পাতা দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি পরিবারের। তবে এদিন মর্গের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বহু দিন ধরেই মর্গের ফ্রিজিং সিস্টেম অকেজো। মৃতদেহ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ন্যূনতম পরিকাঠামোর অভাবের কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরিবারের লোকজনকেই বরফ কিনে দিতে হয়। প্রীতমের ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও ময়নাতদন্তের পর চোখ নেই দেখে ক্ষোভ দ্বিগুণ হয়।
advertisement
আরও পড়ুন: শীতের দাপট বাড়ছে বাংলায়, ২৪ ঘণ্টায় ঠান্ডা পড়বে কত? আবহাওয়ার বড় খবর
মর্গের কর্মীদের আরও চাঞ্চল্যকর বক্তব্য, সেখানে দীর্ঘদিন ধরেই ইঁদুরের উৎপাত রয়েছে। আগেও এমন ঘটনার উদাহরণ নাকি রয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, মর্গ ‘রেস্ট্রিকটেড জোন’, বাইরে থেকে প্রবেশের অনুমতি থাকে না। নিয়মিত পর্যবেক্ষণও করা হয়। তাই ইঁদুরের উপস্থিতির কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই। তাহলে কোথায় গেল মৃতদেহের চোখ! দু’পক্ষের বয়ানে এই গরমিল আরও বাড়িয়ে দিয়েছে রহস্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয় যশোর রোড দিয়ে ফেরার পথে পরিবার তাঁর গাড়ি আটকে ঘটনার কথা জানায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এরপর গঠন হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।
পুলিশের পক্ষ থেকেও তদন্ত প্রক্রিয়ার ভিডিও রেকর্ডিং করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে তদন্ত কমিটি। অন্যদিকে, মৃত যুবকের স্ত্রী কেয়া ঘোষ দাস কান্নায় ভেঙে পড়ে জানান, প্রীতমই ছিল বাড়ির একমাত্র উপার্জনকারী। ১৮ দিন আগে সিজারে সন্তান হয়েছে। স্ত্রী এখনও শারীরিকভাবে অসুস্থ। এই অবস্থায় স্বামীর দেহের সঙ্গে এমন ঘটনা, কী করবেন বুঝতে পারছি না। তাঁর দাবি, ইঁদুর চোখ খুবলে নিলে শরীরে তার দাগ থাকত। এখানে যেভাবে চোখের অংশ সরানো হয়েছে তা দেখে মনে হচ্ছে চোখটি তুলে নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তদন্ত কমিটির রিপোর্টের দিকেই এখন সবার নজর।
আরও পড়ুন: কাফ মাসলকে শরীরের ‘দ্বিতীয় হৃৎপিণ্ড’ বলা হয়, যত্ন নিতে কিছু করেন? জানুন চিকিৎসকের মত
যদিও হাসপাতালের পরিকাঠামোগত সমস্যা, মর্গের রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও নজরদারির ফাঁকফোকর নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। হাসপাতালে আসা রোগীর পরিজনদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মুখেও এখন একটাই আশঙ্কা ঘুরপাক খাচ্ছে, বারাসাত হাসপাতালেও কি তাহলে অঙ্গ পাচার চক্র সক্রিয়! তদন্তে কি উঠে আসে এখন তারই অপেক্ষায়। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী রাজ্য পুলিশ প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই মৃত যুবকের পরিবারের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।






