বর্ধমান শহরের কাঞ্চননগড়ে প্রধান রাস্তার উপরে বিরাজমান এই গেট,যার নাম বারো দুয়ারী গেট। যা আজও বর্ধমানের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। জানা যায়,কাঞ্চন নগরে ছিল কীর্তিচাঁদের প্রাসাদ সেই প্রাসাদের চারিদিকে মোট ১২ টি গেট তৈরি করেছিলেন তিনি। কিন্তু বর্ধমান শহরের সব থেকে নিচু এলাকায় কাঞ্চননগর। সেই সময় প্রায়ই দামোদরের জল কাঞ্চননগর এলাকায় ঢুকে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হত। ফলে বন্যার ফলে পূর্ব দিকের গেটগুলি ধীরে ধীরে দামোদরের গর্ভে চলে যায়। বিংশ শতকে প্রথমদিকে একটি পুরোপুরি এবং একটি গেটের অর্ধাংশ অবশিষ্ট ছিল। যে গেটটি টিকে ছিল সেটি ১৯১৫ সালে রাজা বিজয় চাঁদ মেহতাব সংস্কার করেছিলেন।
advertisement
ইতিহাসবিদ সর্বজিৎ যশ জানান, ১৭০০ সালে জমিদার জগতরাম রায়ের শাসন কালে মেদিনীপুরের চিতুয়াবরদার শাসক শোহা সিংহ তার ওপর উপর আক্রমণ করেন।আক্রমণের ফলে কিছু সময় চলে যেতে হয়।পরে ফিরে আসেন এবং একদিন কৃষ্ণসায়রে স্নান করার সময় জগতরাম রায়কে হত্যা করা হয়। জগতরাম রায়ের পুত্র কীর্তিচাঁদ রায় পিতার হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার কথা ভাবেন,পরবর্তী সময়ে শোহা সিংহ মারা গেলেও তার ভাই হিম্মত সিংহকে হত্যা করেন কীর্তিচাঁদ।পিতার হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার আনন্দে বর্ধমানের কাঞ্চননগড়ের যে প্রাসাদ ছিল তার চারিদিকে দিকে ১২ টি গেট করা হয়।কিন্তু বর্তমানে একটি গেট রয়েছে।
কালের নিয়মে দামোদর নদে ১১টি গেট বিলীন হলেও, বারো দুয়ারী গেট আজও সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে কাঞ্চননগরে। যা বহন করে চলেছে বর্ধমানের ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়।