পূর্ব বর্ধমানের অন্যতম প্রতীক এবং শহরের প্রাণকেন্দ্র এটি। এই তোরণটি বর্ধমান শহরের এক সমৃদ্ধ ইতিহাসের সাক্ষী, যা আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড এবং বিজয় চাঁদ রোডের সংযোগস্থলে।
বর্ধমান মানেই কার্জন গেট যা সকলের কাছেই খুব পরিচিত, কিন্তু এটি এই তোরণের আসল নাম নয়। এই তোরণটির আসল নাম স্টার অফ ইন্ডিয়া যা স্বাধীনতা পরবর্তীকালে সংস্কারের পর পরিবর্তন করে করা হয় বিজয় তোরণ। বর্ধমানের রাজার অমন্ত্রনে বর্ধমানে আসেন লর্ড কার্জন আর তাঁকেই সম্মান জানাতে এই গেট তৈরি হয়। ১৯০৩ সালে তৈরি হয় এই গেট তৈরির কাজ এবং শেষ হয় ১৯০৪ সালে। আর্কিটেকচারাল এই স্থাপনাটি কৃষি ও বাণিজ্যের প্রতীক হিসেবে তিনটি নারী মূর্তি দ্বারা সজ্জিত, যা বর্ধমানের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির প্রতিনিধিত্ব করে।
advertisement
আরও পড়ুন: বাংলায় এসআইআরের কাজ কবে থেকে শুরু হচ্ছে? কমিশনের বিশেষ বৈঠকেই উঠে এল দিনক্ষণের আভাস
কার্জন গেটের খিলানটি আটটি গোল আকৃতির কলাম দ্বারা সমর্থিত এবং এর উপরে ২১ টি প্রতীক সম্বলিত চক্র রয়েছে, যা এই তোরণকে দিয়েছে একটি রাজকীয় রূপ দিয়েছে। এটি গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোডের পাশে অবস্থিত এবং শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য। ইতিহাসবিদ সর্বজিৎ যশ জানান, সেই সময় বর্ধমান শহর ছিল শ্যামবাজার থেকে কাঞ্চননগড় পর্যন্ত বাকি এলাকা ছিল ফাঁকা,তখন বর্ধমানের একটি মূল তোরণটি তৈরি করা হয়। এটি মুলত উদ্দেশ ছিল লর্ড কার্জনের তখন বর্ধমান আসার কথা ছিল তাঁকে সম্মান জানান। তখন এই তোরণটির নাম ছিল স্টার অফ ইন্ডিয়া।
আরও পড়ুন: ভারতীয় ৩ বিজনেস স্কুল বিশ্বের শীর্ষ ১০০-তে স্থান ছিনিয়ে নিল, তালিকায় বাংলার কোন প্রতিষ্ঠান?
পরবর্তীকালে স্বাধীনতার পরে এই গেটের মালিকানা পায় বর্ধমান পুরসভা, পরে এই গেটের কিছু অংশ ভেঙে গেলে বর্ধমান পৌরসভা পূর্ত দফতরকে জানালে সেই সময়ের পূর্তমন্ত্রী ভোলানাথ সেনের তত্ত্বাবধানে কাজ শুরু হয়। যেহেতু বিজয় চাঁদ মাহাতাব এই গেটের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তাই এই গেটের নাম পরিবর্তন করে দেওয়া হয় বিজয় তোরণ। যা লোকমুখে কার্জন গেট নামে পরিচিত। এই তোরণটি স্টার অফ ইন্ডিয়া থেকে বিজয় তোরণ হয়ে ওঠার এক ঐতিহাসিক সময়ের সাক্ষী। গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড এবং বিজয় চাঁদ রোডের সংযোগস্থলে এটি আজও বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্র। প্রতিটি ইটে যেন লুকিয়ে রয়েছে বর্ধমানের নানান ইতিহাস।